রাজধানীর পল্টন থানার বিস্ফোরক মামলায় জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তার বিরুদ্ধে দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন ডিবি পুলিশের উপ পরিদর্শক মালেক। অপর দিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূর তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডের আবেদনে বলা হয়, গত বছরের ২৬ মার্চ বিকেলে এ মামলার আসামি মাওলানা মামুনুল হক জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ভেতরে নাম না জানা জামাত-শিবির, বিএনপি, জঙ্গি সদস্য ও মৌলবাদী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সারা দেশব্যাপী গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে সরকার পতনের লক্ষ্যে হামলার পরিকল্পনা করেন তারা।
এর ফলশ্রুতিতে মামুনুল হকের নির্দেশনায় আসামিরা চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ সারা দেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করে সংবিধান লঙ্ঘন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস, মসজিদ ভাংচুর করে দেশকে অস্থিতিশীল, অকার্যকর, মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিনত করার মাধ্যমে অবৈধ পথে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। গোলাম পরওয়ারও এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে একাধিক সূত্রে তথ্য পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এ আসামি এজাহারে বর্ণিত ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি, অবৈধ পথে সরকার উৎখাতের হীন ষড়যন্ত্রের জন্য অর্থ যোগানদাতা ও উসকানীদাতাদের শনাক্ত করে গ্রেফতারসহ ঘটনার সময় ব্যবহৃত অস্ত্র এবং তাদের কাছে থাকা ককটেল ও বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে দেশি-বিদেশি সরকার ও রাষ্ট্রপপ্রধানদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত কর্মসূচী বানচাল করা ও ঢাকাসহ সারাদেশে ব্যাপক তান্ডব চালিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করে আসামিরা। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ২৬ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অস্ত্র নিয়ে মুসল্লিদের ওপর হামলাসহ নাশকতার অভিযোগে পল্টন থানার পুলিশ কর্মকর্তা খন্দকার আরিফ-উজ-জামান মামলাটি দায়ের করেন।
এরআগে ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর ৭ সেপ্টেম্বর ভাটারা থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনের একটি মামলায় তার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তার। ১২ সেপ্টেম্বর তার আবারও দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ১৫ সেপ্টম্বর রিমান্ড শেষে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।