আসন্নন বিশ্বকাপের পর টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্ব ছাড়ছেন ভারতের বিরাট কোহলি। বিশ্বকাপের পর ভারতের প্রধান কোচের পদ ছাড়ছেন রবি শাস্ত্রীও। এমন সিদ্ধান্ত নিজেই জানিয়েছেন শাস্ত্রী।
ভারতের সংবাদমাধ্যমকে শাস্ত্রী বলেন, ‘মনে হয়, ভারতের কোচ হিসেবে আমার সব পাওয়া হয়ে গেছে। তাই আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত ভারতের কোচ হিসেবে থাকছি।’
ভারতের কোচ হিসেবে তৃপ্ত শাস্ত্রী। কোচ হিসেবে নিজের সাফল্যগুলো তুলে ধরে শাস্ত্রী বলেন, ‘পাঁচ বছর টেস্ট ক্রিকেটে এক নম্বর দল ছিলো ভারত। অস্ট্রেলিয়াতে দু’বার সিরিজ জয়। ইংল্যান্ডের লর্ডস এবং ওভালে টেস্ট জয়। আমার কাছে এগুলোই সব। আমি তৃপ্ত।’
২০১৪ সালের অগাস্টে ভারতের টিম ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পান শাস্ত্রী। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে দুই বছরের চুক্তিতে ভারতের কোচের দায়িত্ব নেন তিনি। ২০১৯ বিশ্বকাপের সময় সাময়িকভাবে তার মেয়াদ বাড়ানো হয় দেড় মাস। ঐ বছরের আগাস্টে আবারও দুই বছরের জন্য নতুন চুক্তি করেন তিনি। যার মেয়াদ এ বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত।
শাস্ত্রীর অধিনে সাফল্য চোখে পড়ার মত হলেও, আইসিসির ইভেন্টগুলোতে ভারতের সাফল্য শুন্য। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয় ভারতকে। নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছিলো তারা। আর গত জুনে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে সেই নিউজিল্যান্ডের কাছে হারে ভারত। তবে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে নিজের সময়কে দারুণ সফল বলেই মনে করেন শাস্ত্রী। তাই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন তার।
তিনি বলেন, ‘সাদা বলের ক্রিকেটে সব দেশকে আমরা তাদের মাঠে গিয়ে হারিয়েছি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতলে সেটা আরও আনন্দের হবে। আর কিছু চাই না। আমার মনে হয় কখনও এক জায়গায় বেশি দিন থাকা উচিত নয়। দলের থেকে যা চেয়েছি সেটাই পেয়েছি। যা চেয়েছি তার থেকে অনেক বেশিই পেয়েছি।’
শাস্ত্রীর মতে, ক্রিকেটে ভারতকে কোচিং করা, ফুটবলে ব্রাজিল বা ইংল্যান্ডকে কোচিং করানোর মতো। সব সময় জয়ের জন্য একটা বাড়তি চাপ থাকে। তিনি বলেন, ‘করোনা আছে না নেই, সেটা নিয়ে দল ভাবেনি। তারা জিততে চেয়েছে, রান করতে চেয়েছে। মনে হয়েছে ব্রাজিল বা ইংল্যান্ডের ফুটবল দলকে কোচিং করাচ্ছি। সব সময় আমার দিকে কটা বন্দুক তাক করা ছিলো। টানা ছ’মাস ভাল খেলার পর একটা ইনিংসে ৩৬ রানে অলআউট। সাথে-সাথে গুলি করে দিলো। সাথে-সাথে পরের ম্যাচ জিততে হবে। না হলে আমাকে আরও চাপে পড়তে হবে।’
অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটে যাবার আগেই দায়িত্ব ছাড়তে চান শাস্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটার আগেই সরে যাওয়া উচিত। সাথে যুক্ত করতে চাই, এই দলকে নিয়ে আমি যা করতে চেয়েছি সব পেরেছি। ফলে নিজেকে সফল হিসেবে দাবি করতেই পারি।’