স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাল অনুমোদন দেখিয়ে করোনা টেস্টের নামে ৫কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগে তিন প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- আব্দুল্লাহ আলামিন (ম্যানেজিং ডিরেক্টর), আবুল হাসান তুষার (চেয়ারম্যান) ও মোহাম্মদ শাহিন মিয়া (মার্কেটিং ম্যানেজার)। এসময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার, আইডি কার্ড, ভিজিটিং কার্ড, ট্যাক্স সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরণের জাল নিয়োগপত্র উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকা ও ঝালকাঠি জেলা হতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, রাজধানীর শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণিতে অবস্থিত আল-রাজি কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় ফ্লোরকে নিজেদের কার্যালয় সাজিয়ে গত ১১ জুলাই একটি প্রতারক চক্র টিকেএস গ্রুপ ‘টিকেএস হেলথকেয়ার সার্ভিস’ নামক নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান বানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর একটি আবেদন করে। ওই আবেদনে বাংলাদেশের ৮টি বিভাগ, ৬৪টি জেলা, ৪৯২টি উপজেলা এবং ৪হাজার ৫৬২টি ইউনিয়নে বিনামূল্যে করোনা টেস্ট করানোর ব্যবস্থা করতে তাদের মোট ৫হাজার ১২৬ জন সম্মুখ যোদ্ধা প্রস্তুত আছে মর্মে আবেদনে উল্লেখ করে। ডিবির কর্মকর্তা বলেন, ‘ভুঁইফোড় এই প্রতিষ্ঠানের বৈধ কোনও অস্তিত্ব না থাকায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে কোভিড টেস্ট, লোক নিয়োগ, ক্যাম্প স্থাপনের কোনও অনুমতি তারা পায়নি। এরপর তারা জালিয়াতি শুরু করে।’
এছাড়া তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জাকিয়া পারভীনের সই ও সিল জাল করে নিজেরাই বুথ স্থাপন, স্যাম্পল কালেকশন, লোক নিয়োগ এবং ক্যাম্পাস স্থাপনের অনুমতি দিয়ে দেয়। এই ভুয়া অনুমতি পত্রের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃতরা ঢাকা এবং ঝালকাঠি জেলার উপজেলা কো-অর্ডিনেটর এবং ইউনিয়নের ফিল্ড অফিসার পদে বিভিন্ন জনকে নিয়োগ দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয় বলেও জানান তিনি। ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার জানান, স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত কোনও রকম সনদ এবং অভিজ্ঞতা না থাকার পরেও শুধু অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য এই চক্রটি প্রতারণা করে আসছিল।