সিরাজগঞ্জে উল্লাপাড়ায় পৌর শহরে ঝিকিড়া মহল্লায় বাড়ির ছাদে ড্রাগন ফলের চাষ করে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন মোঃ কামরুজ্জামান স্বপন। তিনি একজন সরকারি চাকুরী জীবি। স্বপন সিরাজগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের পরিসংখ্যান সহকারী হিসেবে কর্মরত। ঝিকিড়া মহল্লায় তার নিজস্ব বাসা বাড়ির ছাদে এবং নিচের খোলা জায়গায় ড্রাগন চাষ শুরু করেন। বর্তমান স্বপনের বাড়ির ছাদে সবমিলে প্রায় দুই হাজার ড্রাগন গাছ রয়েছে। তিনি ২০১৯ সালে দু’বিঘা ফসলী জমি লিজ নিয়ে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন।
সরকারি চাকুরীজীবী মোঃ কামরুজ্জামান স্বপন উল্লাপাড়া পৌর শহরের ঝিকিড়া মহল্লায় বাড়ির ছাদে ছোট বড় টবে প্রায় দুই হাজার ড্রাগন গাছ রোপন করেছেন। তার সাফল্যে এলাকার বেকার যুবকরাও ড্রাগন ফল চাষের আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
কামরুজ্জামান ৩ বছর আগে উপজেলার কালীগঞ্জ মাঠে দু’বিঘা ফসলি জমিতে প্রাথমিক ভাবে ড্রাগন ফল চাষের উদ্যোগ নেন। প্রথম প্রথম বেশ লাভও হয় তার। ফসলি জমি নিচু হওয়ায় গত বছর বন্যার পানিতে গাছগুলো ডুবে যায়। এতে তার মোটা অংকের ক্ষতি হয়। পরে কামরুজ্জামান তার ফসলি জমি থেকে ডুবে যাওয়া ড্রাগন উদ্ধার করে বাড়ির ছাদে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করেন।
কামরুজ্জামান স্বপন প্রতিবেদককে জানান, গত বন্যার পানিতে ফসলী জমির ড্রাগন গাছ ডুবে যাওয়ায় ঝিকিড়ায় বাড়ির ছাদে ড্রাগন ফল চাষের সিদ্ধান্ত নেন। পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথমে ছাদে প্লাস্টিকের টবে কয়েকটি গাছ লাগান। পরে সাফল্যের হাত ছানী পেয়ে ভালো ভাবে পরিচর্যা করেন। কামরুজ্জামান স্বপনের পাশাপাশি তার স্ত্রী তাহমিনা বেগম ড্রাগন ফল চাষে পুরাপুরি সহযোগিতা করেন। কয়েক দিনের মধ্যে গাছগুলোতে বেশ ফলও ধরে। বাণিজ্যিক ভাবে চাষ কারার সিদ্ধান্ত নেয়। বর্তমানে ছাদে ছোট বড় প্রায় দুই হাজারে বেশি ড্রাগন গাছ রয়েছে।
তিনি আরো জানান, গাছে ফুল থেকে ফল পরিপক্ক হতে ৬০ থেকে ৬৫ দিন সময় লাগে। তার ছাদে থাই রেড, থাই ওয়াইট, থাই পিংক রোজ, ভিয়েতনামি রেড, ইজরাইলি ইয়লো জাতের ড্রাগন ফল গাছ রয়েছে। মে মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ড্রাগন গাছগুলো ফল দিয়ে থাকে। স্থানীয় বাজারে জাত ভেদে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে ড্রাগন ফল পাইকারি বিক্রি করে থাকেন। ড্রাগন ফল বিক্রয়ের পাশা পাশি চারা গাছ বিক্রয় করেন। তিনি দেশের বিভিন্ন জেলায় অনলাইনে কুরিয়ারে মাধ্যমে ড্রাগন গাছ বিক্রয় করে থাকেন। এক একটি চারা জাত ভেদে ৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করে থাকে। তার ড্রাগন ফল চাষে সাফল্য দেখে অনেকেই ড্রাগন চাষে উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি জানান, ইতি মধ্যে তিনি কামরুজ্জামান স্বপনের ড্রাগন ফল বাগান পরিদর্শন করেছেন। ড্রাগন ফলের চাষ প্রকৃতই লাভজনক। কামরুজ্জামান স্বপন ড্রাগন ফল চাষ করে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন। কৃষি অফিস থেকে স্বপনকে এই ফল চাষে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়েছেন।