অলিম্পিক নারী ফুটবলে প্রথমবারের মত স্বর্ণ পদক জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়েছে কানাডা। গতকাল অনুষ্ঠিত ফাইনালে টাই ব্রেকারে ৩-২ গোলে জয়ী হয়ে অলিম্পিকের ইতিহাসে ফুটবলে কানাডাকে প্রথম স্বর্ণ উপহার দেয় নারী দলটি।
নির্ধারিত সময়ের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র ছিল। উত্তেজনাপূর্ণ পেনাল্টিতে কানাডিয়ান গোলরক্ষক স্টিফানি লাবে দুটি শট রুখে দিয়ে দলের জয়ে মূল ভূমিকা রেখেছেন। এর আগে ৩৪ মিনিটে স্টিনা ব্ল্যাকস্টেনিয়াসের গোলে এগিয়ে গিয়েছির সুইডিশরা। টুর্নামেন্টে এটি স্টিনার পঞ্চম গোল। কিন্তু ৬৭ মিনিটে জেসি ফ্লেমিংয়ের পেনাল্টিতে সমতায় ফিরে কানাডা। নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময়েও আর কোন গোল না হওয়ায় ম্যাচটি গড়ায় টাই ব্রেকারে। ব্রাজিলের বিপক্ষেও পেনাল্টি শ্যুট আউটে কানাডাকে জয় উপহার দিয়েছিলেন ৩৪ বছর বয়সী অভিজ্ঞ গোলরক্ষক লাবে। আনা আনভেগার্ড ও জোনা এ্যান্ডারসনের শট রুখে দেবার পর লাবে কানাডাকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান। এই দুজনের মাঝে সুইডিশ অধিনায়ক ক্যারোলিন সেগার বারের উপর দিয়ে বল পাঠিয়ে ব্যর্থ হন। শেষ শটে জুরিয়া গ্রোসো কোন ভুল করেননি। তার গোলের পরপরই পুরো কানাডিয়ান শিবির উল্লাসে ফেটে পড়ে। এর আগে দুইবার ব্রোঞ্জ পদক পাওয়া কানাডিয়ান তারকা অধিনায়ক ক্রিস্টিন সিনক্লিয়ার অবশেষে স্বর্নের দেখা পেলেন।
টোকিওর প্রচন্ড গরমের কথা মাথায় রেখে আয়োজকরা ম্যাচটি টোকিও অলিম্পিক স্টেডিয়াম থেকে সড়িয়ে ইয়োকোহামার নিশান স্টেডিয়ামে আয়োজন করে। একইসাথে ম্যাচের সময় সকাল ১১টা থেকে সড়িয়ে রাত ৯টায় নির্ধারণ করা হয়। তারপরেও ২৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় খেলতে হয়েছে দু’দলকে।
এনিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মত অলিম্পিকের ফাইনালে খেললো সুইডেনের নারী দলটি। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে জার্মানীর কাছে পরাজিত হয়ে তারা রৌপ্য পদক পেয়েছিল। এবারের আসরে প্রথম থেকেই দারুন অপ্রতিরোধ্য ছিল সুইডেন। পাঁচ ম্যাচে শতভাগ জয় নিয়ে তারা ফাইনালে উন্নীত হয, এর মধ্যে ছিল বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন যুক্তরাষ্ট্রকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেবার সুখস্মৃতি।
পাঁচ বছর আগে রৌপ্য পদক জয়ী সেই দলটির পাঁচজন খেলোয়াড় কালকের ফাইনালে মূল দলে খেলেছেন। কানাডিয়ান কোচ বেভ প্রিয়েস্টম্যান বিস্ময়করভাবে চারবারের অলিম্পিক বিজয়ী ও সেমিফাইনালিস্ট যুক্তরাষ্ট্রকে বিদায় করার মূল একাদশ নিয়ে কাল খেলতে নামেননি। অস্ট্রেলিয়ান বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে গোল করা ফ্রিডোলিনা রোলফোর কার্লিন শট দারুন দক্ষতায় রুখে দেন লাবে। জ্যাকবসনের হেডও কর্ণারের মাধ্যমে রক্ষা করেন লাবে। ৩৪ মিনিটে অবশ্য আর কানাডাকে আর রক্ষা করতে পারেননি লাবে। আসলানির সহযোগিতায় ব্ল্যাকস্টেনিয়াসের ডিফ্লেকটেড শটে এগিয়ে যায় সুইডেন।
বিরতির পর কানাডা ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠে। সে কারনে আরো বেশী আগ্রাসী হয়ে তারা খেলা শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সেমিফাইনালের মতই ৩৮ বছর বয়সী সিনক্লিয়ার একটি পেনাল্টি আদায় করে নেন। আর সেই স্পটকিক থেকে সুইডিশ গোলরক্ষক হেভিগ লিন্ডালকে উল্টো দিকে পাঠিয়ে দলকে সমতায় ফেরান ফ্লেমিং।
১৯৮৪ সালের ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপের পর এটাই বৈশ্বিক কোন টুর্নামেন্টে কানাডার প্রথম শিরোপা।