চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ১৭ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে ৯১৫ জনের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ৩২ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, এন্টিজেন টেস্ট, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও আটটি ল্যাবে গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের ২ হাজার ৭৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ৯১৫ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৬৪১ জন ও তেরো উপজেলার ২৭৪ জন।
উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে রাউজানে সর্বোচ্চ ৪৭ জন, বোয়ালখালীতে ৪৪ জন, পটিয়ায় ৩৮ জন, ফটিকছড়িতে ৩২ জন, সীতাকু-ে ২৮, সন্দ্বীপে ২২ জন, লোহাগাড়ায় ১৯ জন, বাঁশখালীতে ১৮ জন, সাতকানিয়ায় ১২ জন, মিরসরাইয়ে ৭ জন, হাটহাজারী ও আনোয়ারায় ৩ জন করে এবং রাঙ্গুনিয়ায় ১ জন রয়েছেন। জেলায় এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৭৮ হাজার ৪৩৬ জন।
সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৫৮ হাজার ৯৬৪ জন ও গ্রামের ১৯ হাজার ৪৭২ জন।
গতকাল করোনায় শহরের ৭ ও গ্রামের ১০ রোগী মারা যান। ফলে মৃতের সংখ্যা এখন ৯৩২ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ৫৬১ জন ও গ্রামের ৩৭১ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৩০৪ জন। জেলায় মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৫৪ হাজার ৯২২ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭ হাজার ৬৭৩ জন এবং ঘরে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৪৭ হাজার ২৪৯ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৩৭১ জন এবং ছাড়পত্র নেন ২২৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ২ হাজার ৮৭৯ জন।
উল্লেখ্য, গতকাল ১৭ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে চলতি মাসের প্রথম সাতাশ দিনে চট্টগ্রামে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২২৫ জনে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, নমুনা সংগ্রহের বিভিন্ন বুথে গতকাল ৭৯৭ জনের এন্টিজেন টেস্ট করা হলে শহরের ১০১ ও গ্রামের ১৭১ জনকে পজিটিভ বলে জানানো হয়। ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৮৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ১২৫ ও গ্রামের ৫১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ২০১ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ৭৪ ও গ্রামের ১০ জনের শরীরে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ১৯৯ টি নমুনায় শহরের ৭৭ ও গ্রামের ১০ টিতে জীবাণুর উপস্থিতি চিহ্নিত হয়। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ৪৮ টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৩ টিসহ ৩০ টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে ২৫৭ নমুনা পরীক্ষা হলে শহরের ৮৯ ও গ্রামের ১১ টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২৪৭ টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৪ টিসহ ৯৭ টি, মা ও শিশু হাসপাতালে ৫৭ নমুনায় গ্রামের ৫ টিসহ ২৯ টি এবং মেডিকের সেন্টারে ৬০ নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের একটিসহ ৩২ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এদিন চট্টগ্রামের ৫৮ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় ৮ জনের ফলাফল পজিটিভ আসে। এ ৮ জনই গ্রামের বাসিন্দা।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ও এপিক হেলথ কেয়ারে এদিন কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, এন্টিজেন টেস্টে ৩৪ দশমিক ১৩ শতাংশ, বিআইটিআইডি’তে ২০ দশমিক ২৭, চবি’তে ৪১ দশমিক ৭৯, সিভাসু’তে ৪৩ দশমিক ৭২, আরটিআরএলে ৬২ দশমিক ৫০, শেভরনে ৩৮ দশমিক ৯১, ইম্পেরিয়ালে ৩৯ দশমিক ২৭, মা ও শিশু হাসপাতালে ৫০ দশমিক ৮৭, মেডিকেল সেন্টারে ৫৩ দশমিক ৩৩ এবং কক্সবাজার মেডিকেল ল্যাবে ১৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ।