চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২৮ জন নতুন শনাক্ত হয়েছেন। সংক্রমণ হার ২৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত ২ রোগীর মৃত্যু হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ ও নগরীর ছয়টি ল্যাবে গতকাল শুক্রবার ১ হাজার ৬৬১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন পজিটিভ ৩০২ জনের মধ্যে শহরের ৩০২ ও ৯ উপজেলার ১২৬ জন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৭৩ হাজার ৮১০ জন। এর মধ্যে শহরের ৫৫ হাজার ৯৪৫ ও গ্রামের ১৭ হাজার ৮৬৫ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ হাটহাজারীতে ৬১, আনোয়ারায় ২২, সীতাকু-ে ১২, বোয়ালখালী ও মিরসরাইয়ে ৯ জন করে, রাউজানে ৮, পটিয়ায় ৩ এবং ফটিকছড়ি ও বাঁশখালীতে একজন করে রয়েছেন।
গতকাল করোনায় চট্টগ্রাম মহানগরীর একজন ও গ্রামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা এখন ৮৬২ জন। এতে শহরের ৫৩০ ও গ্রামের ৩৩২ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ২০৩ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা বেড়ে ৫৩ হাজার ৩৩৩ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭ হাজার ৪২৪ জন এবং বাসা থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৪৫ হাজার ৯০৯ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২৮৯ জন এবং ছাড়পত্র নেন ১৮৭ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ২ হাজার ১১৯ জন।
উল্লেখ্য, গতকাল ২ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে চলতি মাসের প্রথম ২১ দিনে চট্টগ্রামে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৫৫ জনে। গত এপ্রিল, মে ও জুন মাসের প্রথম ২১ দিনে যথাক্রমে ৯১, ৬৯ ও ৪০ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। তবে গতকাল শনাক্ত রোগী কমলেও সংক্রমণ হার আগের দিনের চেয়ে বেশি। ২০ জুলাই সংক্রমণ হার ছিল ২৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এ সময় ৭৯০ নতুন রোগী শনাক্ত ও ৪ জনের মৃত্যু হয়।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ৯৩৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ১১৭ ও গ্রামের ১৯ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ২৬৬ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ৬৯ ও গ্রামের ১৯ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২৩৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ৫৯ ও গ্রামের ২৫টিতে করোনাভাইরাস থাকার প্রমাণ মিলে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১০৫ জনের নমুনায় গ্রামের ৫৬ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ ১১টি নমুনায় গ্রামের ২টিসহ ৯টিতে ভাইরাসের উপস্থিতি চিহ্নিত হয়।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব মা ও শিশু হাসপাতালে ৬৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ৩টিসহ ৪৫টি ও মেডিকেল সেন্টারে ২৭টি নমুনার মধ্যে গ্রামের একটিসহ ৯টিতে করোনার জীবাণু থাকার প্রমাণ মিলে। এদিন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ১২টি নমুনা পাঠানো হয়। পরীক্ষায় একটির পজিটিভ ও ১১টির রেজাল্ট নেগেটিভ আসে।
তবে ঈদের দিন হওয়ায় তিনটি ল্যাব বন্ধ ছিল। বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরন, ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ও এপিক হেলথ কেয়ারে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি। এদিন কোনো ল্যাবে এন্টিজেন টেস্টও করা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ১৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ, চমেকে ৩৩ দশমিক ০৮, চবি’তে ৩৫ দশমিক ৫৯, সিভাসু’তে ৫৩ দশমিক ৩৩, আরটিআরএলে ৮১ দশমিক ৮২, মা ও শিশু হাসপাতালে ৬৫ দশমিক ২২, মেডিকেল সেন্টারে ৩৩ দশমিক ৩৩ এবং কক্সবাজার মেডিকেলে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।