কোরবানির ঈদের দিন চট্টগ্রাম নগরীর যত্রতত্র জবাইকৃত পশুর চামড়া ফেলে দেয়া যাবে না।
কোন মৌসুমী ব্যবসায়ী যদি অন্যান্য বারের ন্যায় চামড়া সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করে যত্রতত্র ফেলে দেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে তৎপর থাকবেন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতীয় সম্পদ কাঁচা চামড়ার সংরক্ষণ, ক্রয় ও বিক্রয়, পরিবহনসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা সার্বক্ষণিক তদারকির লক্ষে আজ বিকেলে চসিক টাইগারপাসস্থ অস্থায়ী ভবনের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গঠিত মনিটরিং কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বর্জ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মো. মোরশেদ আলী, কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, মোহাম্মদ জাবেদ, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের কর্মকতা ডিডিএলফি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) এর সহকারী পরিচালক ডা. কামরুল আযাদ, আনসার ভিডিপির রেঞ্জ কমান্ডার রাফিউল ইসলাম, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সেতু ভুষণ দাশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনের পরিচালক মো. সলিম উদ্দীন, বিসিক চট্টগ্রামের উপ-মহাব্যবস্থাপক জামাল নাসের চৌধুরী, ডিআইজ অফিসের এসপি মো. হাসান বারী প্রমুখ। সভায় সিটি কর্পোরেশনের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম বলেন, সরকার দীর্ঘদিন পর এবার চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকেও বলা হয়েছে ওয়ার্ড পর্যায়ে কাউন্সিলরদের সমন্বয়ে চামড়া সংরক্ষণে প্রচার প্রচারণা চালানোর জন্য। শেষ মুহূর্তে যেহেতু সিদ্ধান্ত এসেছে এবার প্রাথমিকভাবে প্রচার প্রচারণা হিসেবে সিসিএলে বিজ্ঞাপন দেয়া হবে। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও কর্র্পোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটগণ তৎপর থাকবেন যাতে কোন মৌসুমী ব্যবসায়ী যেখানে-সেখানে চামড়া ফেলে যেতে না পারে।
সভায় বলা হয়, এবার সারাদেশে এক কোটির মতো পশু কোরবানি হবে। চট্টগ্রাম নগরে আট লাখ নয় হাজার পশু জবাই হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সরকার এবার এক কোটি বর্গফুট চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তা হতে হবে লোমবিহীন (ওয়েভ ব্লু ) চামড়া। কাজেই পশু জবাই করার পর যেন-তেনভাবে পশুর চামড়া ও পশুর কান এবং মাথার চামড়া যেন-তেনভাবে ছড়িয়ে ফেলে দেয়া যাবে না। কারণ বিসিক এবার পর্যাপ্ত লবন সরবরাহের ব্যবস্থা রেখেছে। কাজেই মৌসুমী ব্যবসায়ীরা লবনজাত করে তিন/চার দিন পশুর চামড়া সংরক্ষণ করতে পারবেন। চামড়া নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। মফস্বলের মৌসুমী ব্যবসায়ীরাও যথাযথ প্রক্রিয়ায় লবনজাত করে চামড়া তিন/চার দিন সংরক্ষণ করতে পারবেন। সংরক্ষণ করা গেলে মফস্বলের ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবেন আশা করি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, তারা এবার কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণ ও চামড়া ছড়ানোর প্রক্রিয়ার বিষয় নিয়ে বিশ হাজার লিফলেট ছাপিয়েছেন, যা মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও নগরবাসীর মাঝে বিলি করা হবে। কারণ চামড়া সংরক্ষণ করে মাদ্রাসা ও এমিতখানাগুলো। কাজেই যথাযথ প্রচারে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন তৎপর থাকলে চামড়া শিল্প এবার লাভজনক হবে বলে আশা করি।