চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণের হার প্রতিদিন বাড়ছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ৩৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এ সময়ে নতুন ৬১১ জনের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় ৪ রোগী মারা গেছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজসহ ১১টি ল্যাব ও এন্টিজেন টেস্টে গতকাল চট্টগ্রামের ১ হাজার ৬৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে নতুন ৬১১ জন পজিটিভ শনাক্ত হয়। এর মধ্যে শহরের ৪৬৫ ও ১৩ উপজেলার ১৪৬ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ সীতাকু-ে ৩২, মিরসরাইয়ে ২৪, রাউজানে ১৯, হাটহাজারীতে ১৮, পটিয়ায় ১৪, ফটিকছড়িতে ১১, রাঙ্গুনিয়া ও আনোয়ারায় ১০ জন করে, সাতকানিয়ায় ৩, বাঁশখালীতে ২ এবং লোহাগাড়া, চন্দনাইশ ও সন্দ্বীপে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৬২ হাজার ২শ’ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের ৪৮ হাজার ২৯৫ ও গ্রামের ১৩ হাজার ৯০৫ জন।
গতকাল সুস্থ্যতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ১৩৫ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৫০ হাজার ৩৩৫ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬ হাজার ৭৬০ জন এবং বাসা থেকে চিকিৎসায় সুস্থ্য হন ৪৩ হাজার ৫৭৫ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২০৫ জন এবং ছাড়পত্র নেন ১৭০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৬১১ জন।
উল্লেখ্য, গতকালের আক্রান্তের হার এ পর্যন্ত চট্টগ্রামের সর্বোচ্চ। আগের দিন ছিল ৩৫ দশমিক ০২ শতাংশ। সংক্রমিতের সংখ্যা কিছুটা কমে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। গত চৌদ্দ মাসে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ঘটে ৫ জুলাই। এ সময় ৯ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়।
গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬২ হাজার অতিক্রম করে। আগের দিন ৬৬২ জন পজিটিভ শনাক্ত হলে মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়ায় ৬১ হাজার ৫৮৯ জন ছিল। গতকাল ৬১১ জন নতুন রোগী যুক্ত হওয়ায় এ সংখ্যা এখন ৬২ হাজার ২শ’ জন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে সর্বোচ্চ ৪১৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ১২০ ও গ্রামের ৩৫ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২৪৩টি নমুনার মধ্যে শহরের ৪৬ ও গ্রামের ৩১টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ১৩৩ জনের নমুনার মধ্যে গ্রামের ৪ জনসহ ৪৫ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১১৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ৩৫ ও গ্রামের ২৪ জন ভাইরাসবাহক চিহ্নিত হন। বিশেষায়িত কভিড-১৯ চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ৪৫টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৪টিসহ ২৭টির পজিটিভ রেজাল্ট আসে। নমুনা সংগ্রহের বিভিন্ন বুথে ২৬১ জনের এন্টিজেন টেস্ট করা হলে শহরের ৫৬ ও গ্রামের ৩১ জন করোনা শনাক্ত হিসেবে চিহ্নিত হন।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে ১৪০টি নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের ৩টিসহ ২৭টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১২১টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ২টিসহ ৫৬টি, মা ও শিশু হাসপাতালে ৩১টি নমুনায় গ্রামের ২টিসহ ১৫টি, মেডিকেল সেন্টারে ৫১টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ২টিসহ ১৮টি এবং এপিক হেলথ কেয়ারে ৭৬টি নমুনায় গ্রামের ৬টিসহ ৪৩টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এদিন চট্টগ্রামের ৩ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় দু’টির ফলাফল পজিটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৩৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ, সিভাসু’তে ৩১ দশমিক ৬৯, চমেকে ৩৩ দশমিক ৮৩, চবিতে ৫০ দশমিক ৮৬, আরটিআরএলে ৬০ শতাংশ, এন্টিজেন টেস্টে ৩৩ দশমিক ৩৩, শেভরনে ১৯ দশমিক ২৮, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৪৬ দশমিক ২৮, মা ও শিশু হাসপাতালে ৪৮ দশমিক ৩৮, মেডিকেল সেন্টারে ৩৫ দশমিক ২৯, এপিক হেলথ কেয়ারে ৫৬ দশমিক ৫৮ এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৬৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ সংক্রমণ হার চিহ্নিত হয়।