দেশের ব্যবসায়ীদের বড় অংশ প্রস্তাবিত বাজেটকে সমর্থন করেছেন উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যেক্তারা এবারের বাজেটকে সমর্থন করছেন। আশা করি তারা করসহ অন্যান্য সুবিধা কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবেন।
আজ শনিবার অনলাইনে আয়োজিত সিপিডি বাজেট সংলাপ ২০২১ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের যেসব জায়গায় সংশোধন বা সংযোজন-বিয়োজন করা যায়, সেটা নিয়ে ব্যবসায়ীসহ বিষেজ্ঞদের মতামত আমরা পাচ্ছি। দেশের জন্য ভাল হয়, এমন মতামতকে সরকার সবসময় গুরুত্ব দেয়।
সিপিডির বিশেষ ফেলো প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সংলাপে সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান, সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী ও ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসীম উদ্দিন, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (এমসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর, বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, রপ্তানিমূখী তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম, শ্রমিক নেত্রী কল্পনা আক্তার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে সিপিডির বাজেট পর্যালোচনা তুলে ধরেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন দ্রুততর করার লক্ষ্যে সরকার আইএমইডির সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এজন্য জেলা পর্যায়ে আইএমইডির অফিস সম্প্রসারণের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স ৪০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার পেছনে ২ শতাংশ প্রণোদনা প্রদান বড় আকারে কাজ করছে বলে তিনি মনে করেন।
এম এ মান্নান বলেন, ভ্যাট আইন-২০১২ উপযুক্ত আকারে বাস্তবায়ন করা গেলে ভ্যাট রাজস্ব আহরণ অনেকাংশে বেড়ে যেত। কিন্ত সেটা আমরা পরিনি।
তিনি আরও বলেন, ভ্যাট ব্যবসায়ীরা দেন না, গ্রাহক পরিশোধ করেন। কিন্তু আমাদের এখানে এটাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়।
বাজেট বাস্তবায়ন বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে রেহমান সোবহান বলেন, বাজেটের আকার কত এর চেয়ে বড় বিষয় হলো-যে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে, সেটির যথার্থ খরচ হচ্ছে কিনা। মানসম্মত বাজেট বাস্তবায়ন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। সেদিকে সবচেয়ে বড় বেশি নজর দিতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এফবিসিসিআই-এর সভাপতি মো. জসীম উদ্দিন বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট করহার আড়াই শতাংশ কমানো হয়েছে। কিন্তু অপরদিকে অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ৫ শতাংশের পরিবর্তে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। তিনি অগ্রিম আয়কর পরিহারের প্রস্তাব করেন।
ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর এআইটি বৃদ্ধির পরিবর্তে করনেট সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড করনেট সম্প্রসারণ করতে পারে।
অনুষ্ঠানে অন্য বক্তারা বাজেটে স্বাস্থ্যখাত ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।