সরিষা বীজের মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি করা হল নিষিদ্ধ ঘোষিত পপি বীজ। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস চালানটি জব্দ করেছে।
এর সঙ্গে অর্থ পাচারের বিষয়টি জড়িত বলে সন্দেহ করছে সংশ্লিষ্টরা।
আফিমসহ বিভিন্ন মাদক তৈরি করতে ব্যবহার করা হয় পপি বীজ (পোস্তা দানা)। স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক এ পণ্যটির আমদানি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
পুরান ঢাকার আজমিন ট্রেড সেন্টার নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সরিষা আনার নাম করে মিথ্যা ঘোষণায় সেই নিষিদ্ধ পপি বীজই নিয়ে এলো। কায়িক পরীক্ষায় ধরা পড়া এ চালানের বিপরীতে বড় অংকের টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে দাবি চট্টগ্রাম কাস্টমসের।
বিষয়টি মঙ্গলবার নিশ্চিত করে কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জানান, ৩১ মে রাতে আফিমের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত পপি বীজের বড় একটি চালান জব্দ করা হয়েছে চট্টগ্রামে বন্দরে। চালানটি এসেছে মালয়েশিয়া থেকে।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, এ চালানে মালয়েশিয়া থেকে দুই কনটেইনার সরিষা বীজ আসার কথা ছিল। সিএন্ডএফ এজেন্ট হটলাইন কার্গো ইন্টারন্যাশনাল এ চালানটি খালাসের দায়িত্ব নিয়েছিল। কিন্তু গোপন সূত্রে জানা যায়, সরিষা বীজের সঙ্গে ৪২ টন পপি বীজও এনেছে প্রতিষ্ঠানটি।
পরবর্তীতে কায়িক পরীক্ষা শেষে চালানটি আটক করে পণ্যগুলো ল্যাবে পরীক্ষা করলে পপি বীজের প্রমাণ মেলে। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১৫ কোটি টাকার পপি বীজ এনেছে বলে জানিয়েছে কাস্টমস।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘পুরান ঢাকার আজমিন ট্রেড সেন্টার নামের প্রতিষ্ঠানটি ৫৪ টন সরিষা বীজ আনার ঘোষণা দিয়ে তার বিপরীতে মাত্র ১২ টন সরিষা বীজ ও ৪২ টন আমদানি নিষিদ্ধ পপি বীজ নিয়ে আসে। আমদানি করা এসব পপি বীজের দাম ১৫ কোটি টাকা।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি দুটি কনটেইনারের প্রথম দিকে সরিষা বীজ ও ভেতরে পপি বীজ রাখে, যাতে কায়িক পরীক্ষায় তাদের কারসাজি ধরা না পড়ে। এই অপরাধে কাস্টমসের আইনে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।’
আন্তর্জাতিক বাজারে ৪২ টন পপি বীজের বিক্রয় মূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা হলেও সরিষা বীজের মূল্য বাবদ এলসির মাধ্যমে ২২ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। ফলে পণ্যের বাকি মূল্য অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করে পরিশোধ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দ-নীয় অপরাধ। নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি ও বিদেশে অর্থপাচার কারা করছে তা খতিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছে কাস্টম হাউস।
উল্লেখ্য, প্রতিবছরই দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে আফিম ক্ষেত ধ্বংস করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকার আফিম চাষ নিষিদ্ধ করে।