প্রথম ম্যাচে অসাধারণ এক জয় পাওয়া বাংলাদেশের লক্ষ্য এখন এক ম্যাচ হাতে রেখেই শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ওয়ানডে সিরিজ নিশ্চিত করা। আগামীকাল মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে লংকানদের মুখোমুখি হবে টাইগাররা।
দুপুর একটায় শুরু হওয়া ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টিভি ও টি স্পোর্টস। অবশ্য আবহাওয়া পুর্বভাস অনুযায়ী কাল বজ্র সহ বৃষ্টিপাতের আশংকা রয়েছে। সে কারণে সিরিজ নিশ্চিতের জন্য আরো এক ম্যাচ সময় পাচ্ছে বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচে সফরকারী দলের বিপজ্জনক হয়ে উঠা ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ভিতি কাটিয়ে ৩৩ রানের জয় নিশ্চিত করেছে স্বাগতিকরা। লংকান ওই ব্যাটসম্যান ৬০ বলে করেছেন ৭৪ রান। প্রথম ম্যাচে জয় পেলেও স্বাগতিকদের জন্য সেটি ছিল বিড়ম্বনার ব্যাপার।
স্লো উইকেটে বেশ ভাল ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। তবে সর্বোচ্চ ৮৪ রান এসেছে দলের সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে। এছাড়া মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৫৪ ও অধিনায়ক তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে যুক্ত হয়েছে ৫২ রান।
ম্যাচের আগে সর্বস্ব দিয়ে লড়াইয়ের জন্য অধিনায়ক তামিম ইকবাল সতীর্থদের প্রতি আহ্বান জানালেও দারুন ভাবে ব্যর্থ হয়েছেন লিটন দাস ও মোহাম্মদ মিথুন। দলের ব্যাটিং লাইনও পুরোপুরি সঠিক ছিলনা। কারণ ভাল ব্যাট করার পরও অপ্রয়োজনীয় রিভার্স সুইপ খেলে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন মুশফিক। তামিম ও মাহমুদুল্লাহও স্লিপে ক্যাচ দিয়ে উইকেট হারিয়ে এসেছেন। অথচ তাদের যে কারো ব্যাট থেকে অন্তত একটি সেঞ্চুরি পাওয়া উচিৎ ছিল বলে মনে করেন টাইগার অধিনায়ক।
তার মতে ফিল্ডিং ও বোলিংও পুরোপুরি সন্তোষজনক নয়। যে কারণে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পেরেছেন হাসারাঙ্গা। কন্ডিশনের সঙ্গে তিনি যদি পুরোপুরি মানাতে পারতেন তাহলে একাই হয়তো দলকে জয়ের বন্দরে পৌছে দিতে পারতেন।
তামিম বলেন,‘ আমরা জনি আমাদের কাজ শেষ হয়নি। সিরিজে এখনো দুটি ম্যাচ বাকী আছে। আশা করি পরবর্তী ম্যাচগুলোতে আরো ভাল দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারব।’
তিন ফর্মেটের ক্রিকেটে সর্বশেষ ১০ ম্যাচের নয়টিতে হার ও একটিতে ড্র করার পর প্রথম ওডিআই সিরিজে খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। ফলে স্বল্প ব্যাবধানে হলেও এই জয়ে খুশি অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে একই সঙ্গে তার প্রত্যাশা দলটি প্রথম ম্যাচের ভুলগুলি শুধরে নিক এবং এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করবে।
টাইগার দলপতি আরো বলেন,‘ মুশফিকুর ও মাহমুদুল্লাহ যেভাবে লড়াই করেছেন তাতে আমি খুশি। তরুণ তারকা আফিফও দারুন ব্যাট করেছে। আমরা ভদ্রচিত ২৫০ রান করেছি। কারণ এটি ছিল ˜িগুন গতির। জয়ের ধারায় ফেরাটাও ভাল দিক। সব ফর্মেটে আমরা একটানা ১০টি ম্যাচ হেরেছি। তাই জয় পাওয়াটা খুশির ব্যাপার।’
এ দিকে বাংলাদেশ যখন সিরিজ জয়ের ছক কষছে তখন সিরিজ বাঁচানোর চিন্তায় মশগুল সফরকারী শ্রীলংকা। অধিনায়ক কুশল পেরেরা অবশ্য বলেছেন, তারা কোন অবস্থাতেই সহজে ছাড় দিবেন না। লংকান দলপতি বলেন,‘ পরাজিত হওয়াটা ভাল কিছু নয়। তবে সেখানে অনেক ইতিবাচক বিষয় ছিল। আমরা ভাল বল করেছি। বাংলাদেশ ভাল একটি দল। আর আমাদের বোলাররা খুব একটা অভিজ্ঞ নয়। তারপরও টাইগারদের ২৫৭ রানে আটকে দিয়ে তারা বেশ ভাল দক্ষতাই দেখিয়েছে।
টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের অন্তত ৩০-৩৫ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করতে হবে। ইসুরু ও ওয়ানিন্দু আমাদের জন্য সুযোগ সৃস্টি করে দিয়েছিলেন। তবে স্বাগতিক বোলারদের কারণে শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারিনি। আমাদের হাতে এখনো দুটি ম্যাচ রয়েছে এবং আমাদেরকে আরো শক্তি সঞ্চার করে ফিরতে হবে।’
দুই দলের মধ্যে অতীত ফলাফলের পরিসংখ্যানে এগিয়ে রয়েছে শ্রীলংকা। দুই দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত ৪৯ ওয়ানডে ম্যাচের মধ্যে ৩৯টিই জয়লাভ করেছে দ্বীপ রাষ্ট্রটি। গতকালের ম্যাচ সহ বাংলাদেশ মাত্র আটটি ম্যাচে জয়লাভ করেছে। দুই ম্যাচে কোন ফলাফল আসেনি।