×
ব্রেকিং নিউজ :
প্রধান উপদেষ্টাকে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণ ট্রাম্প সমর্থকদের ‘আবর্জনা’ বলায় সমালোচনার মুখোমুখি বাইডেন সুপার টাইফুন কং-রে-র সাথে লড়ছে তাইওয়ান হ্যারিসের সমাবেশে ক্যাপিটলে দাঙ্গা নিয়ে সমর্থকদের উল্লাস স্পেনে প্রবল বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় বেশ কিছু লাশ উদ্ধার দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৫শ’ ছাড়ালো আমি প্রচুর গালিগালাজ শিখেছি : পরী মণি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের আমরা যেন ভুলে না যাই : নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে : জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার
  • প্রকাশিত : ২০২১-০১-২৮
  • ৪৯৬ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

 চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ষষ্ঠ নির্বাচিত মেয়র।
নগরীর এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমন্যাসিয়ামে স্থাপিত অস্থায়ী অফিস থেকে চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামানের নেতৃত্বে কর্মকর্তা গতকাল গভীর রাতে ফলাফল ঘোষণা করেন।
নগরীর ৭৩৫ কেন্দ্রের মধ্যে ৭৩৩ কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী নৌকা প্রতীকের রেজাউল করিম চৌধুরী পেয়েছেন ৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ২৮৪ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি’র ডা.শাহাদাত হোসেন পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪২৯ ভোট। প্রথমবারের মতো ইভিএমে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৪ লাখ ৩৫ হাজার ৪৯০ জন ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোটের হার ২২ শতাংশ। নগরীতে মোট ভোটার ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন এবং নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন। তবে, দুপুরে ইভিএম ভাঙচুর ও কেন্দ্রে গোলযোগ সৃষ্টি হলে পাথরঘাটা ওয়ার্ডের দুই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।
এদিকে, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটলেও সকাল ৮টা থেকে এক টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত সার্বিক শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। মূলত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে বিরোধকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সহিংসতা হয়েছে। কাউন্সিলরের বিরোধে সকালে পাহাড়তলী নয়াবাজারে একজন এবং বিকেলে আমবাগানে একজন নিহত হন। এছাড়া, আওয়ামী লীগের এক বিদ্রোহী প্রার্থী ও বিএনপির এক প্রার্থীকে গোলযোগ সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। উত্তর পাহাড়তলী ৯ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জহুরুল ইসলাম জসিমকে বিকেলে আটক করে পুলিশ। পাথরঘাটা ওয়ার্ডে কয়েকটি কেন্দ্রে মারামারি ও কেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ ইসমাঈল বালীকে দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে আটক করা হয়।
মেয়র পদে অবশিষ্ট ৫ জনের প্রাপ্ত ভোট : মিনার প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন ২ হাজার ১২৬ ভোট, আম প্রতীক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আবুল মনজুর ৪ হাজার ৬৫৩, হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম ৪ হাজার ৯৮০, চেয়ার প্রতীক নিয়ে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ ১ হাজার ১০৯ ভোট এবং হাতি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে খোকন চৌধুরী ৮৮৫ ভোট।
সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২টি ওয়ার্ডে আজ ভোটগ্রহণ হয়নি। আলকরণ ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলেমান সেলিমের মৃত্যুতে ওই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি এ নির্বাচনের নতুন তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া পূর্ব বাকলিয়া ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে মো. হারুনুর রশিদের সাথে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। অবশ্য এ দু’টি ওয়ার্ডে মেয়র ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
রেজাউল করিম চৌধুরীর জয়ের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ছয়টি নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোট পাঁচ বার জয়ী হলেন। ১৯৯৪ সালে প্রথম মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আলহাজ এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বিএনপির মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন। অবশ্য সে সময়ে বিএনপির সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল। এরপর ২০০০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মীর নাছিরকে পুনরায় হারিয়ে চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন। মেয়র হিসেবে মহিউদ্দিন চৌধুরীর হ্যাটট্রিক বিজয় আসে ২০০৫ সালে। সেবারও প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মীর নাছির। ২০১০ সালে মহিউদ্দিন চৌধুরী হেরে যান তাঁরই এক সময়ের শিষ্য এবং পরপর তিনবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত ওয়ার্ড কমিশনার এম মনজুর আলমের কাছে। সে সময়ে মনজুর আলম বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পঞ্চম পরিষদে ২০১৫ সালে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের আ জ ম নাছির উদ্দিন। তিনি বিএনপি প্রার্থী এম মনজুর আলমকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন।
মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হয় গত বছর ৫ আগস্ট। নির্বাচন কমিশন ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে। তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে দলীয় মনোনয়ন পর্যন্ত সবই সম্পন্ন হয়েছিল। নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে করোনার প্রকোপ বেড়ে গেলে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী দায়িত্ব পালনের জন্য চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনকে ৪ আগস্ট প্রশাসক নিযুক্ত করে সরকার। সুজন ৬ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এদিকে, করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ার পর নতুন করে ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করা হয় ২৭ জানুয়ারি। গত ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা। গতকাল ভোট গ্রহণের মধ্য দিয়ে আগামী পাঁচ বছরের জন্য ষষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের মেয়র এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর চূড়ান্ত হলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat