নাটকীয় ম্যাচে বার্সেলোনাকে অতিরিক্ত সময়ে ৩-২ গোলে পরাজিত করে স্প্যানিশ সুপার কাপের শিরোপা জিতেছে এ্যাথলেটিক বিলবাও। ১৭ বছরের বার্সা ক্যারিয়ারে এই প্রথমবারের মত লাল কার্ড দেখে মাঠ ত্যাগে বাধ্য হয়েছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি।
রেফারির শেষ বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে মেজাজ হারিয়ে বিলবাও স্ট্রাইকার আসিয়ার ভিলালিব্রের সাথে অশোভন আচরণ করেন মেসি। এর আগে স্প্যানিশ এই স্ট্রাইকারের ৯০ মিনিটের গোলে বার্সেলোনার জয় বঞ্চিত হয়েছিল। পরবর্তীতে ভিএআর’র সহযোগিতায় নিশ্চিত হয়ে মেসিকে লাল কার্ড দেখান রেফারি জেসুস গিল।
আঁতোয়ান গ্রীজম্যানের দুই গোলে বার্সেলোনার সামনে শিরোপা জয়টা সময়ের ব্যপার ছিল। কিন্তু ভিলালিব্রের সমতাসূচক গোলের পর অতিরিক্ত সময়ে তিন মিনিটে ইনাকি উইলিয়ামসের দুর্দান্ত স্ট্রাইকে উল্টো বিলবাওয়ের জয় নিশ্চিত হয়।
সেভিয়ার সাথে থাইয়ের ইনজুরিতে পড়া মেসিকে পুরো ১২০ মিনিটই মাঠে থাকতে হয়েছিল। বার্সেলোনা শেষ পর্যন্ত টাই ব্রেকারের জন্য খেলেছিল। কিন্তু ম্যাচের হতাশায় শেষ পর্যন্ত আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেনি ৩৩ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। ভিলালিব্রেকে হাত দিয়ে আঘাতের অপরাধে তাকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। বার্সেলোনার হয়ে ৭৫৩ ম্যাচ খেলা মেসির এটিই প্রথম লাল কার্ডের ঘটনা। ২০০৫ ও ২০১৯ সালে অবশ্য আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে তিনি দুটি লাল কার্ড পেয়েছিলেন।
ম্যাচ শেষে বার্সা কোচ রোনাল্ড কোম্যান বলেছেন, ‘ফুটবলে এত দীর্ঘ সময় কাটানোর পর লিও জানে কখন সে ম্যাচ খেলার জন্য পুরোপুরি ফিট অনুভব করে। আমরা তার সাথে আলোচনা করেই মূল একাদশে খেলানোর সিদ্ধান্ত নেই। সে ম্যাচে ভালই খেলছিল। নিজের সর্বোচ্চটাই দেবার চেষ্টা করেছে।’
মেসির এই ঘটনায় অবশ্য কিছুটা হলেও বিলবাওয়ের শিরোপা জয় চাপা পড়ে গেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার সেমিফাইনালে তারা রিয়াল মাদ্রিদকে পরাজিত করে ফাইনালে উঠেছিল। আর এখন ফাইনালে বার্সেলোনাকে হারিয়ে স্প্যানিশ সুপার কাপের শিরোপা জয় করলো। এর অর্থ হচ্ছে মার্সেলোনা গার্সিয়া টোরালের অধীনে বিলবাওয়ের শুরুটা দারুন হলো। মাত্র দুই সপ্তাহ আগে দলের নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন মার্সেলিনো। যদিও এই জয়ে তার উত্তরসূরী গেইকা গারিটানোকেও প্রশংসিত করেছে ক্লাব। তার অধীনে গত মৌসুমে কোপা ডেল রে ফাইনাল খেলেছিল বিলবাও।
টানা নয় ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড নিয়ে বার্সা মাঠে খেলতে নেমেছিল। সাম্প্রতিক সময়ে কোম্যানের অধীনে দারুনভাবে নিজেদের ফিরে পাওয়া বার্সেলোনা ছিল সবদিক থেকেই উজ্জীবিত। প্রথমার্ধে বিলবাও বার্সার উপর আধিপত্য দেখিয়েছে। পজিশন ও আগ্রাসনের দিক থেকে এগিয়ে ছিল বিলবাও। ৪০ মিনিট পর্যন্ত দুই দলই ধীরে ধীরে আক্রমন করলেও কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি। মেসির পাসে ৪০ মিনিটে গ্রীজম্যান বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন। কিছুক্ষনের মধ্যেই বিলবাও সমতায় ফিরে। দুই মিনিটের মধ্যে উইলিয়ামসের পাস থেকে অস্কার ডি মার্কোসের হাফ ভলিতে বিলবাও সমতা ফেরায়। আলবাসর ক্রস থেকে বিলবাও রক্ষনভাগ ভেঙ্গে গ্রীজম্যান ৭৭ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করলে আবারো এগিয়ে যায় বার্সা। কিন্তু ম্যাচের নাটকীয়তা তখনো বাকি ছিল। ৯০ মিনিটে বিলবাও আবারো সমতায় ফেরার পর ৯৩ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন উইলিয়ামস।