ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
মামলা বাতিল চেয়ে আনা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান সমন্বয়ে গঠিত একটি ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।
একই সাথে আদালত রুলও জারি করেছেন। রুলে মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল করা হবে না, সংশ্লিষ্টদের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আদেশের পর প্রথম আলো সম্পাদকের পক্ষে আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান সাংবাদিকদের বলেন, মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে মতিউর রহমানের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল না। তিনি ঘটনাস্থলেও উপস্থিত ছিলেন না। অনুষ্ঠান তদারকি ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বেও ছিলেন না। অনুষ্ঠানের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়েও তিনি যুক্ত ছিলেন না। এমনকি কোনো সাক্ষী সুনির্দিষ্টভাবে মতিউর রহমানের নামও বলেননি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনে সারবত্তা নেই।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উল্লেখিত যুক্তিতে মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে মামলাটি বাতিল চেয়ে আবেদন করা হয়েছে ।
গত ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্টে আবেদন করেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। ১০ ডিসেম্বর ও আজ ১৩ ডিসেম্বর বিষয়টি নিয়ে শুনানি শেষে আদেশ দেন উচ্চ আদালত।
আদালতে প্রথম আলো সম্পাদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিষ্টার রোকন উদ্দীন মাহমুদ ও মোস্তাফিজুর রহমান খান।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।
নাইমুলের মৃত্যুর ঘটনায় আনা মামলায় প্রথম আলো সম্পাদকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গত ১২ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত। তবে কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হককে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত। একই সঙ্গে ১৪ ডিসেম্বর মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়।
গত বছরের ১ নভেম্বর ঢাকার রেসিডেনসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে কিশোর আলোর বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান ছিল। সেদিন মাঠে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় রেসিডেনসিয়ালের ছাত্র নাইমুল। এরপর তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নাইমুলের বাবা মজিবুর রহমান গত বছরের ৬ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে নালিশি মামলা করেন। এরপর চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি প্রথম আলো সম্পাদক, কিশোর আলো সম্পাদকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইমুল আবরারের মৃত্যুতে কিশোর আলো কর্তৃপক্ষের অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
১২ নভেম্বর যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনে আদেশ দেয়া হয়েছে তারা হলেন- মতিউর রহমান, কবির বকুল, শুভাশিষ প্রামাণিক শুভ, মুহিতুল আলম পাভেল, শাহ পুরান তুষার, জসিম উদ্দিন তপু, মোশারফ হোসেন, মো. সুমন ও কামরুল হওলাদার। আসামিদের সবাই জামিনে রয়েছেন।এই অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন মতিউর রহমান।