বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সাওদা হত্যা মামলায় একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাসেল মিয়ার মৃত্যুদন্ডাদেশ পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আসামির আনা আপিল শুনানি শেষে বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এই রায় দেন।
আদালতে আসামি রাসেল মিয়ার আপিলের শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শিশির মোহাম্মদ মনির, এম মাসুদ রানা ও নওয়াব আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সাওদা হত্যা মামলায় ২০১৫ সালের ১ জুন রাসেল মিয়াকে মৃত্যুদন্ড দেন বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালত। সেই সাথে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। এই রায়ের পর খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন রাসেল মিয়া।
সেই আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে আজ সোমবার হাইকোর্ট রাসেল মিয়ার মৃত্যুদন্ডাদেশ পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন।
আইনজীবী শিশির মনির জানান, ডেথ রেফারেন্স ও আপিল নামঞ্জুর করে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র রাসেলের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদন্ড দেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, বরগুনার পাথর ঘাটার হারুন মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়া ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে সাওদা হত্যাকান্ডের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন। আর বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার আব্দুল রাজ্জাকের মেয়ে নিহত সাওদা তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
প্রেমের সম্পর্কের জেরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সাওদাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তরুণীকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ওইদিনই বিকালে ঢাকায় মারা যান সাওদা।
ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর সাওদার মা সাহিদা বেগম বরিশাল কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাসেলের ছাত্রত্ব বাতিল করে।
২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল রাসেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও)।