×
ব্রেকিং নিউজ :
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের আমরা যেন ভুলে না যাই : নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে : জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার হবিগঞ্জে মা-মেয়ে হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ওএমএস-এর আওতায় ৪৫ পয়েন্টে ভর্তুকি মূল্যে কৃষিপণ্য বিক্রি হচ্ছে ‘অপশক্তির দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ নয়’ আমিরাতের শীর্ষ কোম্পানিসমূহ বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী : রাষ্ট্রদূত ভারত ঐতিহ্যগত ওষুধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে জ্ঞান বিনিময়ে আগ্রহী নদী বাঁচাতে আবরার ফাহাদের দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের পথ নির্দেশ করবে : নাহিদ ইসলাম দুদক চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনারের পদত্যাগ
  • প্রকাশিত : ২০২০-১১-১০
  • ৬৭৯ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

 রাজধানীর আদাবর এলাকার মাইন্ড এইড সাইকিয়াট্রি এন্ড ডি-এডিকশন হাসপাতালে সিনিয়র সহকারি পুলিশ কমিশনার মো. আনিসুল করিম ওরফে শিপন (৩৫) হত্যার ঘটনায় হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজারসহ গ্রেফতারকৃত ১০ জনকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
এরআগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আদাবর থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।
ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত আজ শিপন হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রেফতার হাওয়া হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়সহ ১০ জনের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
মঙ্গলবার গ্রেফতারকৃত ১০ জনকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদাবর থানার পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক মোল্লা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডভূক্তরা (গ্রেফতারকৃত) হলেন, হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন সেফ মো. মাসুদ, ওয়ার্ডবয় জোবায়ের হোসেন, ফার্মাসিস্ট মো. তানভীর হাসান, ওয়ার্ডবয় মো. তানিম মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, মো. লিটন আহাম্মদ ও মো. সাইফুল ইসলাম পলাশ।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ‘আসামিরা সকলেই হাসপাতালে বাবুর্চি, ওয়ার্ডবয়, মার্কেটিং অফিসার ও কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কর্মরত। মামলার এজাহারভূক্ত আসামিরা অনুমোদন ব্যতীত হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে চিকিৎসার নামে অবৈধ অর্থ অর্জন করে আসছিল।’
এতে আরও বলা হয়, ‘এই মামলার ভিকটিম মো আনিসুল করিমকে উন্নত চিকিৎসার আশায় মামলার বাদি গত ৯ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন মানসিক চিকিৎসা দিতে পারেন এমন কোনো ডাক্তার হাসপাতালে কর্তব্যরত ছিলেন না। আসামিরা চিকিৎসা দেয়ার অজুহাতে ভিকটিমকে বলপ্রয়োগ করে হাসপাতালের দোতলায় স্থাপিত একটি অবজারভেশন কক্ষে নিয়ে যায়। আসামিরা ভিকটিমকে মারতে মারতে অবজারভেশন কক্ষে ঢোকায়। তা ঘাড়, পিঠ ও মাথাসহ শরীরে বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে রুমের ওপর উপুড় করে ফেলে দেয়। কয়েকজন ভিকটিমের পিঠে চড়ে বসে, কয়েকজন মাথার ওপর আঘাত করে, বাকিরা দু’হাত পিঠমোড়া করে ওড়না দিয়ে বাঁধে।’
‘আসামিদের এমন অমানসিক নির্যাতনে ভিকটিম মো. আনিসুল করিমের মৃত্যু হয়।
এএসপি শিপনকে মারধরের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার দুপুর পৌনে ১২টায় মানসিক সমস্যার কারণে হাসপাতালে আসেন এএসপি আনিসুল করিম। অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই মারা যান তিনি। হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
দীর্ঘক্ষণ অচেতন থাকা অবস্থায়ও তাকে ভর্তি কার্যক্রম করা হয়নি। কিছুক্ষণ পর ১২টার দিকে তাকে হাসপাতালের লোকজন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান হাসপাতালে নেয়ার আগেই শিপনের মৃত্যু (ব্রট ডেথ) হয় ।
এ ঘটনায় আদাবর থানায় হত্যা একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার আনিসুল করিম শিপনের বাবা বাদি হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে এ মামলা করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. হারুন অর রশিদ।
হারুন অর রশিদ জানান, গত ৯ নভেম্বর দুপুর অনুমান সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত সিনিয়র সহকারি পুলিশ কমিশনার মো. আনিসুল করিমকে চিকিৎসার জন্য তার পরিবারের সদস্যরা আদাবরের এ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয় তাকে ওয়াশরুমে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে হাসপাতালের দোতলায় নিয়ে যায়। তখন তার বোন তার সাথে যেতে চাইলে আরিফ ও রেদোয়ান তাকে বাধা দেয় এবং কলাপসিবল গেট আটকে দেয়। পরে দুপুর ১২টার দিকে আরিফ নিচে এসে তার বোনকে উপরে যাওয়ার জন্য ডাক দেয়। তার বোনসহ পরিবারের লোকজন উপরে গিয়ে আনিসুল করিমকে একটি রুমের ফ্লোরে নিস্তেজ অবস্থায় শোয়া দেখতে পায়। তার পরিবারের সদস্যরা একটি এ্যাম্বুলেন্স যোগে আনিসুল করিমকে দ্রুত শ্যামলীতে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সংক্রান্তে সোমবার রাতে তাঁর বাবা বাদি হয়ে আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলা দায়ের পর পর আদাবর থানা পুলিশ হাসপাতালের ভিডিও ফুটেজে দেখতে পায়, গ্রেফতারকৃতরা আনিসুল করিমকে হাসপাতালের দোতলার একটি রুমে মারতে-মারতে ঢুকায়। তাকে এ রুমের ফ্লোরে জোরপূর্বক উপুড় করে ৩ থেকে ৪ জন হাটু দিয়ে পিঠের উপর চেপে বসে, কয়েকজন পিঠ মোড়া করে ওড়না দিয়ে তার দুই হাত বাঁধে। কয়েক জন অভিযুক্ত কনুই দিয়ে ঘাড়ের পিছনে ও মাথায় আঘাত করে। ফলে আনিসুল করিম দুপুর অনুমান ১২ টার দিকে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। গ্রেফতারকৃতরা পরিকল্পিতভাবে মারপিট করে তাকে হত্যা করেছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
ডিসি তেজগাঁও বলেন, হাসপাতালটি পরিচালনার জন্য বৈধ কোন কাগজপত্র ছিল না। তাদের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এটা একটা ভুঁইফোড় হাসপাতাল। তারা অবৈধভাবে মানসিক রোগীর চিকিৎসার নামে বাণিজ্য করে আসছিল। হাসপাতালের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। হাসপাতালটিতে কয়েকজন রোগী আছেন। তারা চলে গেলে হাসপাতালটি বন্ধ করে করে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, পুলিশ ক্যাডার সদস্য আনিসুল করিম বিসিএস ৩১ তম ব্যাচে ১ম স্থান অধিকার করেন। অত্যন্ত মেধাবী এই কর্মকর্তা কর্মজীবনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটিলিয়ন, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও সর্বশেষ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat