খুলনা বিভাগে রোববার ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের ডাক
নিজস্ব প্রতিনিধি:-
খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় আগামীকাল রোববার ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ, সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার মামলায় বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়ার প্রতিবাদে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে যশোরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটির এক সভা থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।গত ২২ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আল মাহমুদ ফায়জুল কবির। এ ঘটনার প্রতিবাদে ওই দিন থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট শুরু করে চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন।বাসচালক জামির হোসেনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়ার পর থেকে কয়েকদিন ধরে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আজ দুপুরে যশোর শ্রমিক ভবনে জরুরি সভায় বসেন ফেডারেশনের নেতারা। সভায় খুলনা বিভাগের ৩৪টি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। সভা শেষে খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আজিজুল হক মিন্টু পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেন।এর আগে সভায় বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-ট্রাক সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রিপন মণ্ডল, জেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম উদ্দীন, ঝিনাইদহের শ্রমিক নেতা সাগর হোসেন, সাতক্ষীরার শ্রমিক নেতা শাহীন উদ্দীন, যশোরের মোস্তফা কামাল, কালীগঞ্জের আনোয়ার হোসেন। উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা সাদেক আহমেদ খান, রবিউল হোসেন রবি, মোর্তজা হোসেন প্রমুখ।সভায় বক্তারা বলেন, বাসচালক (চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স) জামির হোসেনের মামলা ৩০৪/খ ধারায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা না করে বিচার হয়েছে ৩০৪/ক ধারায়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ার পরও বিশেষ মহলের চাপে তাঁকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। বক্তারা আরো বলেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশের রায় মাথায় নিয়ে শ্রমিকরা গাড়ি চালাবে না।সভা থেকে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার দাবিতে শ্রমিক নেতাদের চাপ দিতে থাকেন শ্রমিকরা। একপর্যায়ে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে চেয়ার ছোড়াছুড়ি শুরু করেন। এ সময় মঞ্চে থাকা নেতারা সভাস্থল ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। প্রায় ২০ মিনিট পর নেতারা ফের সভাস্থলে এসে শ্রমিকদের শান্ত করেন এবং অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।