×
ব্রেকিং নিউজ :
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের আমরা যেন ভুলে না যাই : নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কারের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে : জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার হবিগঞ্জে মা-মেয়ে হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ওএমএস-এর আওতায় ৪৫ পয়েন্টে ভর্তুকি মূল্যে কৃষিপণ্য বিক্রি হচ্ছে ‘অপশক্তির দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ নয়’ আমিরাতের শীর্ষ কোম্পানিসমূহ বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী : রাষ্ট্রদূত ভারত ঐতিহ্যগত ওষুধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে জ্ঞান বিনিময়ে আগ্রহী নদী বাঁচাতে আবরার ফাহাদের দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের পথ নির্দেশ করবে : নাহিদ ইসলাম দুদক চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনারের পদত্যাগ
  • প্রকাশিত : ২০১৭-০৫-২১
  • ৬৬২ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
অটিস্টিক শিশুদের মেডিক্যাল সমস্যা ও খাদ্যাভ্যাস
স্বাস্হ্য ডেস্ক:- আপনার অটিস্টিক সন্তান কিছুই খেতে চায় না বা সুনির্দিষ্ট কয়েকটি খাবারই কেবল খায়- এরকম পরিস্থিতিতে আপনাকে সবার আগে যে কথাটি বলা দরকার তা হলো আপনি একা এ অবস্থায় নেই। অধিকাংশ অটিস্টিক সন্তানের বাবা-মা এ অবস্থার ভেতর আছেন। সাধারণ শিশুদের তুলনায় অটিস্টিক শিশুদের খাদ্যাভ্যাস গঠন ও খাদ্য গ্রহণে পাঁচ গুণ বেশি সমস্যা দেখা যায় মর্মে একটি গবেষণায় দেখা গেছে। সমস্যাগুলোর মধ্যে স্বল্পসংখ্যক খাদ্যগ্রহণ প্রবণতা (Narrow food Selections), নিজস্ব খাদ্যগ্রহণ রীতি (যেমন নিজ খাবার কাউকে স্পর্শ করতে না দেয়া) বা Ritualistic Eating Behaviors, খাবার নিয়ে বদমেজাজ বা দুর্বার ক্রোধ দেখানো (meal-related tantrums) ইত্যাদি। এর পাশাপাশি খুব অল্পসংখ্যক অটিস্টিক শিশুর মধ্যে অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণ বা ওভারইটিংয়ের প্রবণতাও দেখা যায়। আজ আমরা এগুলোর ব্যাপারে কিছু আলোচনা করব। প্রথমে খাদ্যগ্রহণে অনীহা সংক্রান্ত কিছু ব্যাপার নিয়ে সাধারণ আলোচনা করব। ১। মেডিক্যাল সমস্যা: খাবার সাধলেই শিশুটি দু’ঠোঁট শক্ত করে চেপে রাখে বা মুখ বন্ধ করে রাখে, এরকম হলে শিশুটি খাবার গ্রহণে সরাসরি অনীহা প্রকাশ করছে। এর মানে এমনও হতে পারে যে সে জানে খাবারটি খেলেই সে পেটে ব্যথা অনুভব করবে। অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে Gastrointestinal distress একটি কমন সমস্যা। তারা তাদের সীমাবদ্ধ কমিউনিকেশন ক্ষমতার জন্যে হয়তো বুঝাতেও পারছেনা, এদিকে আমরা বাবা-মায়েরা তাদের খাবার খাওয়ার জন্য ক্রমাগত চাপ দিয়েই যাচ্ছি। শিশুর খাদ্যগ্রহণে অনীহার প্রবণতা দেখলেই তাকে একবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান এবং তার শারীরিক অবস্থা নীরিক্ষা করে তার সে সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিন- এটা তার জন্যে উপকারী হবে। ২। ধৈর্য ধরুন: অনেক শিশু কোনো খাবার দেখলে খাবারের আগে সেটা চেক করে দেখে। চেক করা বলতে তারা খাবারের ‘চেহারা’ দেখে, গন্ধ শুঁকে, আবার অল্প পরিমাণে নিয়ে চেখেও দেখে। এরপর তার মর্জি হলে বা ইচ্ছে হলে সে খাবে। অটিস্টিক শিশুদের খাবার সংক্রান্ত সংবেদনশীল আচরণ ক্ষেত্রবিশেষে বিচিত্র। তারা নতুন কোন খাবার গ্রহণ করতে সময় নেয়। এজন্যেই অটিস্টিক শিশুদের খাদ্যাভ্যাস তৈরির ইস্যুতে বাবা-মাদের ধৈর্য ধারণের জন্য অনুরোধ করা হয়। শিশুটি যদি কোনো খাবার অনেকবার চেষ্টা করার পরেও খেতে অনীহা দেখায়, তাহলে বিকল্প অন্য খাবার দিয়ে চেষ্টা করুন। নির্দিষ্ট সময় ধরে খাবার খেতেই হবে, এরকম ‘যুদ্ধে নামার’ প্রয়োজন নেই। প্রথমে তার খাদ্যাভ্যাস তৈরির দিকে প্রাধান্য দিন, পরে সময়ানুযায়ী খাবার খাওয়ানোর চর্চা করুন। ৩। নিজে ক্রিয়েটিভ হোন: অনেক অটিস্টিক শিশু নতুন খাবার পছন্দ করে না। এমন পরিস্থিতিতে কোনো নতুন খাবার তাকে দিলে আপনি সে খাবার খেয়ে খুব মজা পেয়েছেন- এরকম ভাব করুন, তাকেও বলুন মজার খাবারটা সেও যেন খেয়ে নেয়। এছাড়াও তার কোনো প্রিয় খাবারের সঙ্গে নতুন খাবারটি দিতে পারেন। ৪। খাবারের টেক্সচারের দিকটি দেখুন: অটিস্টিক শিশুরা টেক্সচারের প্রতি সংবেদনশীল হয়। খাবারের মান বা ধরণ বা গন্ধ যাই হোক, তারা অনেক সময় এসব দিক দেখেনা। বরং খাবারটা মুখে দিলে কেমন লাগে বা লাগতে পারে, সেটা নিয়ে বেশি চিন্তিত থাকে। এ ব্যাপারে টমেটোর উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। আস্ত টমেটো বা টুকরো করে কাটা টমেটো খেতে একরকম লাগে, কারো কারো কাছে বিস্বাদ লাগে। আবার টমেটোকে ব্লেন্ড করে সালসা বানিয়ে দিলে বা নুডলসে দিলে দেখা যায় তা শিশুটি ভালই খাচ্ছে। অর্থাৎ একই খাবারকে এক ফর্মেটে দিলে মুখে বিস্বাদ লাগলেও অন্য ফর্মেটে কনভার্ট করে দিলে তা খাদ্যাভ্যাসে যুক্ত করা সহজতর হয়। ৫। নতুন নতুন খাবার দিন: হ্যাঁ, তাকে মাঝে মাঝে নতুন কোনো মেন্যু দিন। খাবারে নতুন আইটেম তাকে উৎসাহিত করতে পারে। অথবা নতুনভাবে খাবারকে উপস্থাপন করুন। যেমন, তাকে সস দেয়ার সময় সস দিয়ে প্লেটে একটা ফুল এঁকে দিন। বা পিজ্জাতে সবজি দেয়ার সময় সেগুলো দিয়ে একটি শেপ বানিয়ে দিন। বা ভেজিটেবল কাটার দিয়ে সব্জিকে নতুন শেপে কাটুন। আর এ কাজগুলো এমনভাবে করুন যাতে সে এগুলো দেখে। এতে খাবারের উপস্থাপন তার কাছে নতুন এবং ভিন্নতর দেখাবে। প্রকারান্তরে সেই খাবারে আগ্রহী হয়ে উঠবে। ৬। তাকে পছন্দ করতে দিন: আপনার শিশুটি হয়তো চাইতে পারে যে সে যা খাবে তা তার নিজ পছন্দ অনুযায়ী হবে। আর কোনো খাবারের প্রতি অনীহা একটি সাধারণ ব্যাপার, এটি আমরা বড়রাও করি। তাই তার খাবার চয়েস করার অপশন বিস্তৃত করা যায় কি না, তা ভেবে দেখুন। সেই সাথে তার পছন্দের ব্যাপ্তির মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরি সেট করা যায় কি না তাও ভেবে বের করুন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি ঠিক করলেন যে সে যেন একটি সবজি আইটেম খায় এবং সাথে যেন একটি প্রোটিন আইটেম থাকে। তখন তার সামনে সবজি এবং প্রোটিনের একাধিক আইটেম রাখুন, যাতে সে নিজ পছন্দ অনুযায়ী খাবারটি খেতে পারে। একইভাবে আপনি যখন নুডলস রান্না করছেন তখন তাকে বলুন সে যেন তাতে একটা অতিরিক্ত উপাদান মেশায়। এসময় তার সামনে চিকেন বা সবজি রাখুন। সে যেটি মেশাতে চেয়েছে তা দিয়েই নুডলস রান্না করুন। তার এ কাজটির প্রশংসা করুন। এ খাবারটি সে তেমন কোন বিপত্তি ছাড়াই খেয়ে নেবে। ৭। বিশেষ সতর্কতা: শিশুটিকে খেতে উৎসাহ দেয়ার জন্যে যদি পুরস্কার দেয়াও মতো বিষয় প্রচলন করেন, তবে তা সাময়িকভাবে কাজে দেবে। দীর্ঘমেয়াদী রিওয়ার্ড এর অভ্যাস করলে তা তার জন্য মঙ্গলকর হবে না। এতে সে খাবারে আনন্দ হারিয়ে ফেলবে এবং খেলেও পুরস্কারের লোভে খাবে। আর কিছুদিন পর এই পুরস্কারের প্রতিও তার আকর্ষণ থাকবে না। তখন তা আপনার জন্যে হিতে বিপরীত হয়ে যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat