টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সকল প্রতিষ্ঠানে কমিটি গঠন ও মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদারে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। এই উদ্যোগ কার্যকর হলে সর্বত্র যৌন হয়রানি প্রতিরোধে বিশেষ সহায়ক হবে।
আজ রাজধানীর কাওরান বাজারে ডেইলি স্টার সেন্টারের এ এস মাহমুদ সেমিনার হলে কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থনের প্রয়োজনীয়তা শীর্ষক এক গোল টেবিল আলোচনায় বক্তারা এ কথা বলেন।
আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট সালমা আলী।
বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন (বিএলএফ)’র নির্বাহী পরিচালক এ. কে. এম আশরাফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোল টেবিল আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কর্মজীবী নারীর অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক সানজিদা সুলতানা।
বিশিষ্ট নারী নেত্রী নাজমা ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন আইএলও প্রতিনিধি শাম্মীন সুলতানা, বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা নাইমুল আহসান জুয়েল, কুতুব উদ্দিন আহমদ, আব্দুল মালেক, চায়না রহমান, সাংবাদিক আতাউর রহমান, ইশরাত উর্মি, পান্না বেগম প্রমুখ।
কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বক্তারা বলেন, যৌন হয়রানি বা এর প্রতিরোধে ২০০৯ সালে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনার শতভাগ বাস্তবায়ন করতে হবে। এ নির্দেশনার পাশাপাশি আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসারে আইন ও নীতিমালা গঠন এবং বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। জেন্ডারভিত্তিক হয়রানি ও সহিংসতা মোকাবেলায় ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতি প্রয়োগ করা এবং এ লক্ষ্যে ট্রেড ইউনিয়ন এবং ফেডারেশনের প্রয়োজনীয় সক্ষমতা তৈরি করা জরুরী। গণমাধ্যমও এ ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে।
বক্তারা বলেন, নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা রোধের জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন হলেও শুধুমাত্র আইন দিয়ে নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব নয়। এজন্য নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন করতে হবে। নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও তা বিলোপের আন্দোলন অব্যাহতভাবে পরিচালনা করতে হবে। ২০৩০ সালে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চলতি বছর ১৬ দিনের ঐক্যবদ্ধ প্রচার-কর্মসূচিতে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বন্ধে টেকসই অর্থায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সহিংসতার স্বাস্থ্যগত প্রভাব সারাজীবন স্থায়ী হতে পারে, শারীরিক, মানসিক, যৌন এবং প্রজনন স্বাস্থ্যকেকও প্রভাবিত করতে পারে। তাই, প্রতিটি দেশ এবং সংস্কৃতিতে নারীদের সহিংসতা ও হয়রানিমুক্ত জীবনযাপন নিশ্চিত করতে আরও পদক্ষেপের প্রয়োজন।