ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে এ আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী সিনিয়র এডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আনা মামলায় গতকাল পাপিয়াকে ছয় মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে পাপিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট রবিউল আলম বুদু।
পাপিয়ার পক্ষের আইনজীবী জানায়, পাপিয়া তার বিরুদ্ধে আনা অন্যান্য মামলায় আগেই জামিন পেয়েছেন। দুদকের মামলাটি বর্তমানে বিচারিক আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।
২০২০ সালের ৪ আগস্ট ৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার সম্পদ তাদের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ উপায়ে অর্জিত বলে প্রতীয়মান হওয়ায় এবং জ্ঞাতসারে অপরাধলব্ধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ তাদের ভোগ দখলে রেখে অভিযুক্ত শামীমা নূর পাপিয়া এবং তার স্বামী মফিজুর রহমান দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তাই মামলাটি দায়ের করা হয়।
২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাপিয়া হোটেল ওয়েস্টিনে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা বিল দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন। সে বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন ও অবৈধ টাকা পাচারের অভিযোগে পাপিয়াসহ চার জনকে আটক করে র্যাব। বাকিরা হলেন- পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন, সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়্যিবা।
এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ইন্দিরা রোডে পাপিয়ার বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বেশকিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।