আদালত অবমাননার দায়ে দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমকে এক মাসের কারাদন্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ বেঞ্চ ওই মেয়রের বিরুদ্ধে আনা আদালত অবমাননার আবেদন নিষ্পত্তি করে আজ এ রায় দেন। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে; অনাদায়ে আরও সাত দিনের কারাদন্ড ভোগ করতে হবে। তাকে দিনাজপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। অন্যাথায় তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করা হবে বলে জানান মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের আইনজীবী।
আদালতে মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শাহ মনজুরুল হক। মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল। আর আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্যের জন্য দিনাজপুর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে আপিল বিভাগে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হারুন অর রশীদ, আইনজীবী মাহফুজুর রহমান রোমান, আইনজীবী মো: মনিরুজ্জামান রানা ও আইনজীবী শফিক রায়হান শাওন। এই আবেদনের পর দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমকে ২৪ আগস্ট সকাল ৯ টায় আপিল বিভাগে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়। সেই সাথে এই মেয়রের বক্তব্যের ভিডিওটি অপসারণ করতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। ওই আদেশ অনুযায়ী ২৪ আগস্ট সকালে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আপিল বিভাগে হাজির হলে তার পক্ষে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল নিঃশর্ত ক্ষমা চান। সেই সাথে তারা নিঃশর্ত ক্ষমার একটি লিখিত আবেদনও দাখিল করা হয়। এরপর আপিল বিভাগ মেয়রের নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন ও তার বিরুদ্ধে আসা আদালত অবমাননার অভিযোগের আবেদন শুনানির জন্য আজ ১২ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী আজ শুনানি শেষে রায় দেয়া হয়।
আইনজীবীরা জানায়, মেয়রের নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন গ্রহণ না করে গুরুতর আদালত অবমাননার অভিযোগে তাকে সাজাসহ জরিমানার আদেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার হাইকোর্টের রায়কে কেন্দ্র করে আপিল বিভাগের বর্তমান বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে মন্তব্য করেন মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর। যা ইউটিউবে প্রচার হয়। জাহাঙ্গীরের দেয়া ওই বক্তব্যের সূত্রে আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদনটি করা হয়েছিল। আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৭ আগস্ট আপিল বিভাগ জাহাঙ্গীরের প্রতি আদালত অবমাননার নোটিশ ইস্যু করেন। আদালত অবমাননার জন্য জাহাঙ্গীরকে কেন শাস্তি দেয়া হবে না, সে বিষয়ে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়। পাশাপাশি ২৪ আগস্ট তাকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।