মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের সাজা বাড়ানোর আর্জি জানিয়ে বিচারিক আদালতের রায় বিষয়ে হাইকোর্টে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি এটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী আজ বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদিলুর রহমান খান ও এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের সাজা বাড়ানোর আর্জি পেশ করে হাইকোর্টে আপিল দাখিল করা হয়েছে। অবকাশ শেষে কাল ৮ অক্টোবর হাইকোর্টে নিয়মিত বিচারিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। আমরা বিষয়টি আদালতে মেনশন করবো। এরপর বিষয়টি আদালতের কার্যতালিকায় আসবে। এরপর প্রাথমিক শুনানির পর নিয়ম অনুযায়ী আপিল এডমিট (শুনানির জন্য গ্রহণ) হবে। পরবর্তীতে মামলা শুনানির জন্য প্রস্তুত হলে আপিলের ওপর শুনানি হবে।
এদিকে আদিলুর রহমান খান ও নাসির উদ্দিন এলানের দুই বছরের সশ্রম কারাদ-ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে গত ২৫ সেপ্টেম্বর আপিল করা হয়েছে। আপিলে খালাসের পাশাপাশি তারা জামিনের আর্জি পেশ করেছেন।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়ার অভিযানে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে আনা মামলায় মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দুই বছরের সশ্রম কারাদ- দেয়া হয়। একইসঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে, যা অনাদায়ে আরও ১ মাসের কারাদ- দেয়া হয়েছে। ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ রায় ঘোষণা করেন।
২০১৩ সালে দায়ের হওয়া এই মামলার আসামি অধিকারের সম্পাদক আদিলুর এবং সংগঠনটির পরিচালক নাসির। তারা দুই জনই জামিনে ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের কারাগারে নেয়া হয়।
বিচারিক আদালতের রায়ে সাজা আইনানুগ হয়নি বলে দাবী রাষ্ট্রপক্ষের। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় সাজা ৭ বছর হলেও এ আসামিদের সাজা হয় ২ বছর। রায়ে বলা হয়, আসামিদের অতীতে অপরাধের কোন রেকর্ড নেই। পাশাপাশি তাদের সামাজিক মর্যাদা বিবেচনায় নিয়ে মামলায় রায় দেয়া হয়। এটি আইনানুগ হয়নি বলে মনে করে রাষ্ট্রপক্ষ।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়ার ঘটনায় ৬১ জন নিহত হওয়ার কথা দাবি করেছিল অধিকার। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এই সংখ্যাটি ১৩ বলে জানানো হয়। সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে ওই বছরের ১০ জুন সাধারন ডায়েরি (জিডি) করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে সেটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।