বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে সোমবার মামলা করবেন ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। রোববার (৬ আগস্ট) ঢাকা আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেছেন তিনি।
হিরো আলমের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মনসুর রিপন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হিরো আলম আজ রোববার আদালতে এসেছিলেন। মামলা প্রস্তুত করা হচ্ছে। কাল সোমবার ঢাকার সিএমএম আদালতে দাখিল করা হবে। রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবেন হিরো আলম।’
এর আগে সকালে মহানগর গোয়েন্দা অফিসে (ডিবি) অভিযোগ নিয়ে যান হিরো আলম। কিন্তু ডিবি অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন। এরপর তিনি আদালতে মামলা করার কথা জানিয়ে ঢাকার আদালতের উদ্দেশে রওনা হন। তবে তিনি আদালতে প্রবেশ না করে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পার্কিংয়ে অবস্থান নেন। সেখানে তিনি গাড়িতে বসেই আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ত্যাগ করেন।
এ সময় হিরো আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ মামলা করব না। আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করতে এসেছি।
সম্প্রতি ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নেন হিরো আলম। নির্বাচনে তার ওপর হামলার ঘটনায় ফলে দেশি-বিদেশি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হন তিনি। এ ইস্যু নিয়ে সরকারের সমালোচনা করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।
তবে সম্প্রতি হিরো আলম অভিযোগ তুলেছেন, হামলার ঘটনায় সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন রাজনীতিবিদ তাকে হেয় করে মন্তব্য করছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও ক্লিপে বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করতে দেখা গেছে হিরো আলমকে।
ভিডিওতে এক প্রশ্নের জবাবে হিরো আলমকে বলতে দেখা যায়, আমি কারও বিরুদ্ধে কথা বলতে চাই না। কিন্তু বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। গত কয়েকদিন ধরে দেখছি, বিএনপির বড় একজন নেতা রুহুল কবির রিজভী স্যার আমাকে পাগল বলেছেন। তিনি বলেছেন, হিরো আলাম অর্ধপাগল এবং অশিক্ষিত।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রসঙ্গ টেনে হিরো আলম বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাস স্যার প্রায়ই বলেন, ‘হিরো আলমের মতো লোকও নির্বাচন করে, তাকেও আওয়ামী লীগ পিটাইছে।’ তার এই কথার মানে হলো হিরো চুনোপুঁটি, তাকে নিয়ে তুচ্ছ করে করে কথা বলা যায়।
তিনি বলেন, এমনকি অনেক আওয়ামী লীগ নেতা, জাতীয় পার্টির নেতা, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী হিরো আলমকে নিয়ে হেয় করে কথা বলে। নোংরামি করে, অপমান করে কথা বলছে। কেন আপনারা আমাকে অপমান করে কথা বলবেন, এই বলার অধিকার তো আপনাদের নেই। ভালো না লগলে আমার থেকে দশ হাত দূরে চলে যান।
হিরো আলমের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আপনারা জানেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে মানুষ বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে আসেন। হিরো আলমত এর আগে ডিবিতে বেশ কয়েকবার এসেছিলেন। প্রথমবার এসেছিলেন তাঁর ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়ার ঘটনায়, পরবর্তী এসে ছিলেন নির্বাচনে তাঁর ওপরে হামলার ঘটনায় আসামিদের শনাক্ত করতে। আপনারা জানেন যে এই ঘটনায় জড়িত আসামিদের আমরা গ্রেপ্তার করেছি। আর আজ তিনি এসেছিলেন ডিবির সাইবার ক্রাইম ইউনিট (নর্থ) এ একটি অভিযোগ করেছেন।’
হারুন বলেন, তিনি অভিযোগ করেছেন বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা, তাঁর নাম রুহুল কবির রিজভী, তিনি নাকি তাকে পাগল অর্ধ শিক্ষিতসহ অনেক কথা বলেছেন। এই অভিযোগে একটি আবেদন সাইবার ক্রাইম ইউনিটে করেছে। পরে সেটি আমার কাছে নিয়ে আসা হয়েছে। আমি দেখলাম অভিযোগপত্রে যে অভিযোগ করেছেন সেটি একটি মানহানিকর। অভিযোগ করছেন তার মানহানি করা হয়েছে। যেহেতু মানহানিকার বিষয়, মানহানির অভিযোগ থানা পুলিশ কিংবা ডিবি গ্রহণ করতে পারে না। আদালতে অভিযোগ দিতে হয়। তাকে পরামর্শ দিয়েছি যেন আদালতে তিনি গিয়ে মামলা করেন। তবে তার অভিযোগটা আমরা খতিয়ে দেখব।’