আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজ ছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদারসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত। পলাতক থাকায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদারসহ নয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। একই সঙ্গে গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিলের জন্য ১৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত এ চার্জশিট গ্রহণ করে এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে জামিন বাতিল করে তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আসামি রাকিবুর রহমান রাকিব ও মোরশেদুল আলম পলাশের জামিন বহাল রেখেছেন আদালত।
গ্রেফতারি পরোয়ানাভূক্ত অপর আসামিরা হলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহম্মেদ মন্টু, ফ্রিডম মানিক ওরফে জাফর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মারুফ আহমেদ মনসুর, রিফাত হোসেন, সোহেল রানা, ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, সামসুল হায়দার উচ্ছল ও কামরুজ্জামান বাবুল।
কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন, মশিউর রহমান ইকরাম, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরিফুর রহমান ওরফে ‘ঘাতক’ সোহেল ও তৌফিক হাসান ওরফে বিডি বাবু।
শাহজানপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এরআগে গত ৫ জুন শাহজানপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদারসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার।
তদন্তে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে এক্সেল সোহেল নামে এক আসামির পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় তার অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিচারের জন্য ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। চার্জশিটে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও জাতীয় পার্টির একাধিক নেতার রয়েছেন।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মারুফ আহমেদ মনসুর, বিদেশে পলাতক দুই সন্ত্রাসী জিসান ও ফ্রিডম মানিক, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম, মতিঝিল থানা জাতীয় পার্টির নেতা জুবের আলম খান রবিন, হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল শাহরিয়ার, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা সাগর, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সদস্য কাইল্যা পলাশ, একই ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ‘ঘাতক’ সোহেল, সুমন শিকদার মুসা, মুসার ভাগনে সৈকত, মুসার ভাতিজা শিকদার আকাশ, ইমরান হোসেন জিতু, মোল্লা শামীম, রাকিব, বিডি বাবু, ওমর ফারুক, ‘কিলার’ নাসির, রিফাত, ইশতিয়াক হোসেন জিতু, মাহবুবুর রহমান টিটু, হাফিজ, মাসুম ও রানা মোল্লা। এদের মধ্যে ২৪ জনই কারাগারে।
এ হত্যা মামলায় মুসা, শুটার আকাশ ও নাসির উদ্দিন মানিক স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শোরুমের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এসময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) নামে এক কলেজছাত্রীও নিহত হন। এছাড়া টিপুর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের পর ওইদিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদি হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়।