মাশরাফি বিন মর্তুজার বিধ্বংসী বোলিংয়ে ৫ উইকেট এবং মাত্র ৮০ রানে অলআউট মোহামেডান। জবাব দিতে নেমে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ব্যাট হাতে ছিলো আরও বিধ্বংসী। দুই ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার এবং পারভেজ হোসেন ইমন মিলে মাত্র ৮.২ ওভারেই হারিয়ে দিলো মোহামেডানকে। মাশরাফির দলের জয় ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কিংবা স্থানীয় ক্রিকেট, সম্প্রতি খুব দ্রুত ম্যাচ জয় করে নেয়ার একটা তুমুল প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। মাত্র কয়েকদিন আগেই ভারতকে ১১৭ রানে অলআউট করে দিয়ে মাত্র ১১ ওভারে ম্যাচ জয় করে নেয়ার রেকর্ড গড়েছিলো অস্ট্রেলিয়া। এর কয়েকদিন পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২৬০ রানের বড় স্কোর তাড়া করে দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ জিতেছে ২৯.৩ ওভারে (২৬৪ রান করে)।
এবার বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রতিপক্ষকে কম রানে বেধে ফেলে দ্রুত ম্যাচ জয় করে নেয়ার রেকর্ড গড়লো মাশরাফি বিন মর্তুজার লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। ৪১.২ ওভার (২৪৮ বল) হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছালো রূপগঞ্জ।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সবচেয়ে কম ওভারে জয়ের রেকর্ড কি না এটি বের করা দুরহ। তবে, স্মরণাতীতকালে এত কম ওভারে একদিনের ক্রিকেটে কেউ জয় তুলে নিয়েছে, তার নজির নেই।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে অনুষ্ঠিত ১০০ ওভারের এই ম্যাচটি শেষ হয়ে গেলো মাত্র ৩১ ওভার খেলেই। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইমরুল কায়েসের দল খেলেছে মাত্র ২২.৪ ওভার। জবাব দিতে নেমে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ খেলেছে মাত্র ৮.২ ওভার। কোনো ওয়ানডে ম্যাচও এত কম সময়ে, কম ওভারে শেষ হয়েছে কি না পরিসংখ্যান ঘেঁটে বের করার বিষয়।
ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচটি শেষ হয়েছিলো মাত্র ৩৭ ওভারে। তার চেয়েও মোহামেডান-রূপগঞ্জের ম্যাচটি শেষ হয়েছে ৬ ওভার কম খেলে।
টস জিতে মোহামেডানকে ব্যাট করতে পাঠান লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ব্যাট করতে নেমে শুরুতে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন শূন্য রানে আউট হলেও ইমরুল কায়েস এবং সৌম্য সরকার মিলে গড়ে তোলেন ৫০ রানের জুটি। ৫৩ রানে গিয়ে পড়ে দ্বিতীয় উইকেট।
অর্থ্যাৎ, ১ উইকেটে ৫৩ রান থেকে ৮০ রানে অলআউট মোহামেডান। ১৭ রানেই পড়েছে মোট ৯টি উইকেট। ঝড়ো বাতাসে গাছে থাকা পাকা ফল যেভাবে টাপটপ পড়তে থাকে, সেভাবে পড়েছে মোহামেডানের উইকেট। ইমরুল, সৌম্য, অনুষ্টুপ মজুমদার, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আরিফুল হক, শুভাগত হোম, এনামুল হক জুনিয়র, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, কামরুল ইসলাম রাব্বিরা শুধু আসা-যাওয়ার মিছিলই করেছেন।
মাশরাফি ৮.৪ ওভার বল করে ৩টি মেডেন নিয়েছেন। ১৭ রান দিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট। ভারতীয় চিরাগ জানি নেন ২ উইকেট, নাঈম ইসলাম জুনিয়রও নিয়েছেন ২টি উইকেট। ১টি উইকেট নেন সোহাগ গাজী।
সাবেক ওপেনার এবং লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের প্রধান কোচ তুষার ইমরান জাগোনিউজকে বলেছেন, ‘যে উইকেট ছিল, তা দেখে মনে হয়েছে সেটা ২৮০-২৯০ রানের উইকেট। মোহামেডান ৫৩ রান পর্যন্ত ছিল ভালো অবস্থানে। ১টি উইকেট হারিয়েছিলো শুধু। কিন্তু এরপরই তাদের কি হলো জানি না। একের পর এক উইকেট হারিয়েছে। এটা স্রেফ অবিশ্বাস্য।’
জবাব দিতে নেমে যে উইকেটে মোহামেডান ৮০ রান তুলে প্যাকেট হয়েছে, সেই উইকেটে দাপটের সঙ্গে ব্যাট করলেন রূপগঞ্জের দুই ওপেনার। ২৯ বল খেলে ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন মুনিম শাহরিয়ার। ৪টি বাউন্ডারির সঙ্গে মেরেছেন ১টি ছক্কার মার। অন্যদিকে পারভেজ হোসেন ইমন অপরাজিত ছিলেন ২১ বলে ৪৪ রান নিয়ে। ৪টি করে বাউন্ডারি এবং ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি।
মোহামেডানের নাজমুল অপু, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, এনামুল হক জুনিয়র, কামরুল ইসলাম রাব্বি এবং ইমরুল কায়েসরা মিলে বোলিং করে একটি উইকেটেরও পতন ঘটাতে পারেননি রূপগঞ্জের।