টাইগারদের টি-টোয়েন্টি ও টেস্টে একটি শক্তিশালী দল হিসেবে গড়ে তুলতে সঠিক গেম পরিকল্পনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে ফিরে আসা চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। এই দুই ফর্মেটেই নাজুক অবস্থায় রয়েছে দলটি।
এর আগে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে দায়িত্বপালনকালে ওয়ানডে ফর্মেটে জায়ান্ট দল হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল লংকান এই কোচ। হাথুরু আসার আগে বাংলাদেশ ওয়ানডে ফর্মেটে মাঝেমধ্যে আলো ছড়ালেও তাতে ছিলনা ধারাবাহিকতা। যে কারণে দলটি শক্তিতে পরিণত করার প্রয়োজন ছিল।
হাথুরুসিংহের পরিকল্পনায় বাংলাদেশ সুপার ধারাবাহিক দল হিসেবে গড়ে উঠে। ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ও ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমি-ফাইনালে পৌঁছায়। ওয়ানডে ক্রিকেটে ঘরের মাঠে বাংলাদেশেল ধারাবাহিক সফলতা শুরু হয়েছিল হাথুরুর প্রথম মেয়াদে দায়িত্বকালে । এখন দলটিকে অন্য ফর্মেটেও একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছে দেয়ার গুরুদায়িত্ব দেয়া হয়েছে লংকান এই কোচকে।
বাংলাদেশে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর আজ প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে হাথুরু বলেন,‘ টেস্ট ক্রিকেট খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপুর্ন। টি-টোয়েন্টি অনেক বেশী জনপ্রিয়। সুতরাং আমাদের নিজস্ব গেম পরিকল্পনা খুঁজে বের করতে হবে। জাতি হিসেবে আমরা জানি কিভাবে ওয়ানডে খেলতে হয়। একই সঙ্গে অন্য ফর্মেটেও আমাদের ভালো করতে হবে।’
নতুন মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহনের পর হাথুরুর প্রথম মিশন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। আগামী মাসে ঘরের মাঠে তাদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও তিন ম্যাচের আন্তর্জাতিক টিটোয়েন্টি সিরিজ খেলবে টাইগাররা। ২০১৫ সালের পর ইংল্যান্ডই একমাত্র দল, যারা ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয় করেছে। ২০১৬ সালে হোম সিরিজে টাইগারদের পরাজিত করে তারা।
এখন ওই হারের বদলা নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন হাথুরুসিংহে। তবে লংকান এই কোচ বলেছেন , সিরিজের জন্য এখন কোন গেম পরিকল্পনা করছেন না তিনি। আগে তিনি খেলোয়াড়দের পর্যবেক্ষণ এবং তাদের মতামতের উপর নির্ভর করতে চান।
হাথুরু বলেন,‘ আসন্ন সিরিজে আমি খেলোয়াড়দের পর্যবেক্ষন করতে চাই। আপাতত আমি সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে দলটির বিচার করতে চাই। আমি একটি ভালো টিম কম্বিনেশন গড়ে তুলতে চাই।’
হাথুরুর প্রথম মেয়াদটি ছিল ঘটনাবহুল। ওই সময় তার বিরুদ্ধে প্রধান যে অভিযোগটি ছিল সেটি হচ্ছে তার স্বৈরাচারী মনোভাব। এজন্য তাকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল এবং সিনিয়র খেলোয়াড়দের সঙ্গে সম্পর্কও খারাপের দিকে চলে গিয়েছিল।
এখন অনেক পরিণত হয়েছেন উল্লেখ করে লংকান এই কোচ বলেন, ‘বাংলাদেশের কোচ হিসেবে আগের মেয়াদের তুলনায় এখন আমি অনেক অভিজ্ঞ, পরিপক্ক। বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্পর্কে অনেক বেশী জানি। শুধু আমি নই, স্থানীয় কোচরাও বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে ভুমিকা রেখেছেন। বিগত বছর গুলোতে তারা আসলেই ভালো করেছেন।
আমি সব সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অনুসরণ করেছি। বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রতি সব সময় আমার একটি দূর্বলতা রয়েছে। তাই আমি বাংলাদেশে ফিরতে চেয়েছি। বাংলাদেশের অনেক খেলোয়াড়ই ভালো খেলছে। তরুণরাও উঠে আসছে এবং ভালো করছে। এমন একটি দলের সঙ্গে থাকতে পারাটা সবসময় দারুন ব্যাপার। এটি আমাকে সবচেয়ে বেশী অনুপ্রাণীত করেছে।’