জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার নায়েবে আমির শুরা সদস্য শায়েখ মো. মহিবুল্লাহর ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রাজধানীর ডেমরা থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় তাকে এ রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
আজ বুধবার তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডের নেয়ার আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মঙ্গলবার রাতে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিসিটিসি) সদস্যরা রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে ২টি মোবাইল এবং একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।
তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে মহিববুল্লাহকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে সিটিটিসি।
শায়েখ মো. মহিবুল্লাহ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার আধ্যাত্মিক নেতার ভূমিকা পালন করতো। বৃহত্তর বরিশালে ছিল তার ব্যাপক নেটওয়ার্ক। সে সেখানে ৫০ থেকে ৬০ জন তরুণকে জঙ্গিবাদে প্রশিক্ষণ দেয়। সে প্রথমে হিজরতকারীদের বয়ান দিয়ে বিভ্রান্ত করতো। এরপর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তাদের ঢাকা হয়ে পাহাড়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করতো। তার বয়ানের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় অপব্যাখ্যার মাধ্যমে জঙ্গি সদস্যদের জিহাদের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করা।
বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি জানান, সে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে অবস্থিত জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দিস শারক্বিয়ার প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে যায়। এসময় প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে কুকি-চিনদের বিদ্রোহী সংগঠন কেএনএফ (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট)-এর তত্ত্বাবধানে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ চলতো। সেখানে তার সঙ্গে কেএনএফ-এর প্রধান নাথান বম ও অন্যান্য নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামে সংগঠনের নাম রাখা হয় এবং শুরা কমিটি গঠন করা হয়।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ১৭ সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব। একই সঙ্গে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
এরআগে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ৩৮ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। ফলে সব মিলিয়ে নতুন এ জঙ্গি সংগঠনের ৫৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।