ওপেনার রনি তালুকদারের ব্যাটিং ঝড়ে টানা পঞ্চম জয়ের স্বাদ পেয়েছে রংপুর রাইডার্স।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্ট টুর্নামেন্টের ৩৬তম ম্যাচে রংপুর ৮ উইকেটে হারিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে। রনি ৩৫ বলে ৬৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন।
এই জয়ে ১০ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থস্থানেই থাকলো রংপুর। ১০ ম্যাচে সমান ১৪ করে পয়েন্ট ফরচুন বরিশাল ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। রান রেট বিবেচনায় বরিশাল দ্বিতীয় ও কুমিল্লা তৃতীয়স্থানে আছে। এ ম্যাচ হারলেও ১১ খেলায় ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষেই থাকলো সিলেট।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ টস জিতে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক নুরুল হাসান। এ ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। আগের ম্যাচে পায়ে ব্যাথা পাওয়ায় আজ খেলতে পারেননি নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
সিলেটের হয়ে ইনিংসের শুরু করে সাবলীল ছিলেন না দুই ওপেনার তৌহিদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। পাওয়ার-প্লেতে মাত্র ২৬ রান তুলেন তারা। হৃদয় ও শান্তকে ভুগিয়েছেন আফগানিস্তানের পেসার আজমতুল্লাহ ওমারজাই। পাওয়ার প্লেতে ৩ ওভার বোলিং করে ২ মেডেনে মাত্র ৬ রান দেন তিনি।
নবম ওভারে দলীয় ৪৩ রানে শান্তকে বোল্ড করে সিলেটের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন রংপুরের পেসার হাসান মাহমুদ। ২টি চারে ২২ বলে ১৫ রান করেন শান্ত। তিন নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি জাকির হাসানও। ৭ বলে ৭ রান করে স্পিনার মাহেদি হাসানের শিকার হন জাকির।
১১তম ওভারে ৫৯ রানে ২ উইকেট পতন ঘটে সিলেটের। তখন রান রেট ছয়ের নীচে। এ অবস্থায় হৃদয়কে নিয়ে দ্রুত রান তোলার দিকে মনোযোগী হন মুশফিক। হাসানের করা ১৪তম ওভারে হৃদয়ের ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৭ রান পায় সিলেট। একই ওভারে এবারের আসরে পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন হৃদয়। এ জন্য ৪৩ বল খেলেছেন তিনি।
১৫তম ওভারে ১৫ রান আসায় তিন অংকে পৌঁছায় সিলেটের রান। পরের দুই ওভারে আসে ২৩ রান। পাকিস্তানী পেসার হারিস রউফের করা ১৮তম ওভারে ১৫ রান তুলেন হৃদয় ও মুশফিক। পরের ওভারে মুখোমুখি হওয়া ৩০তম বলে এবারের আসরে প্রথম অর্ধশতকের দেখা পান মুশফিক। শেষ ২ ওভারে ১৯ রান নেন তারা। শেষ পর্যন্ত হৃদয়-মুশফিকের ব্যাটে ২০ ওভারে ২ উইকেটে ১৭০ রান পায় সিলেট।
তৃতীয় উইকেটে ৫৬ বলে অবিচ্ছিন্ন ১১১ রান যোগ করেন হৃদয় ও মুশফিক। এবারের বিপিএলে তৃতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি।
১৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৭ বলে অপরাজিত ৮৫ রান করেন হৃদয়। ৩৫ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় অনবদ্য ৫৫ রান করেন মুশফিক। রংপুরের মাহেদি-হাসান ১টি করে উইকেট নেন।
১৭১ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন রংপুরের দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ও রনি তালুকদার। পাওয়ার প্লেতে ৫৯ রান তোলেন তারা। এরমধ্যে রনি ২৩ বলে ৩৯ ও নাইম ১৩ বলে ১৮ রান করেন।
শ্রীলংকার থিসারা পেরেরা করা অষ্টম ওভারে ২টি ছয় ও ১টি চারে এবারের আসরে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি করেন রনি। ১০ম ওভারে রনির ছক্কায় ১০০ রান পায় রংপুর। একই ওভারের পঞ্চম বলে রনিকে থামান পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ ইরফান। ৩৫ বল খেলে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় আসরে দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি পুর্ন করে ৬৬ রানে থামেন রনি। নাইমের সাথে ৫৯ বলে ১০০ রানের জুটি গড়েন রনি।
১৩তম ওভারে বিদায় নেন নাইম। সিলেটের পেসার রেজাউর রহমানের বলে বোল্ড হন ৩২ বলে ৬টি চারে ৪৫ রান করা নাইম।
নাইম যখন ফিরেন, তখন জিততে ৪৬ বলে ৪৭ রান দরকার পড়ে রংপুরের। তৃতীয় উইকেটে ৩৪ বলে ৫২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন পাকিস্তানী শোয়েব মালিক ও অধিনায়ক নুরুল। মালিক ২৪ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪১ ও নুরুল ১৭ বলে ১৭ রান করে অপরাজিত থাকেন।