চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের নবম আসরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে এসে প্রথম জয়ের স্বাদ পেল সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল। আফগানিস্তানের ইব্রাহিম জাদরানের হাফ-সেঞ্চুরি ও মেহেদি হাসান মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুন্যে আজ দিনের প্রথম ম্যাচে বরিশাল ৬ উইকেটে হারিয়েছে রংপুর রাইডার্সকে। জাদরান করেন ৫২ রান। মিরাজ ব্যাট হাতে ৪৩ রান ও বল হাতে ২ উইকেট নেন। অন্য দিকে নিজেদের প্রথম ম্যাচ জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচে হারলো রংপুর।
আজ মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
বল হাতে বরিশালের ইনিংস শুরু করেন সাকিব। প্রথম বলেই রংপুরের ওপেনার মোহাম্মদ নাইমকে শিকার করেন তিনি। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে খালি হাতে ফিরেন নাইম।
শুরুর ধাক্কা সামলে নেয়ার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার রনি তালুকদার ও মাহেদি হাসান। ৬ রান করা মাহেদিকে বোল্ড করেন জুটি ভাঙেন বরিশালের পেসার এবাদত হোসেন। ১৩ বলে ২৩ রানের জুটি গড়েন তারা । এরপর চার নম্বরে নেমে সুবিধা করতে পারেননি জিম্বাবুয়ের সিকান্দার রাজাও। শ্রীলংকার স্পিনার চাতুরাঙা ডি সিলভার বলে বোল্ড হবার আগে ২ রান করেন রাজা। ফলে পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৮ রানে পরিনত হয় রংপুর।
পাওয়ার প্লে শেষ হবার পর মারমুখী ব্যাট চালান রনি। পরপর দুই ওভারে ৩টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন তিনি। নবম ওভারে চাতুরাঙা বোল্ড আউটের শিকার হওয়ার আগে । ২৮ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪০ রান করেন রনি।
দলীয় ৭৬ রানে রনির বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন পাকিস্তানের শোয়েব মালিক ও অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান । তবে দলীয় ৯৯ রানে সোহানকে থামান বরিশালের স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ২টি চারে ১২ বলে ১২ রান করেন সোহান।
সোহান ফেরার পর রংপুরের রানের চাকা একাই ঘুড়িয়েছেন মালিক। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কায় টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৪৯৩ তম ম্যাচে ৭৪তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ পান এই পাকিস্তানী। ওভারের শেষ বলে ছক্কায় ইনিংস শেষ করেন রংপুরের রবিউল হক। এতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৮ রানের সংগ্রহ পায় রংপুর।
৩৫ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করা মালিক ৫৪ রানে অপরাজিত থাকেন। ৩৬ বল খেলে ৫টি চার ও ২টি ছয় মারেন তিনি। ১৫ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন রবিউল। বরিশালের চাতুরাঙা-মিরাজ ২টি করে, সাকিব-এবাদত-করিম ১টি করে উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১৫৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বরিশাল। বাঁ-হাতি স্পিনার রকিবুল হাসানের বলে ১ রান করে আউট হন ওপেনার চাতুরাঙা।
তবে সতীর্থকে হারালেও দলের রান চাকা ঘুড়িয়েছেন আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয়। তবে চতুর্থ ওভারে রাজার করা প্রথম বলে লেগ বিফোর আউট হন বিজয়। এডিআরএস’এর সিদ্বান্তে বিদায় হয় ১১ বলে ১৫ রান করা এ ওপেনারের।
চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে বাউন্ডারি দিয়ে রানের খাতা খোলেন মিরাজ। চড়াও হন রংপুরের বোলারদের উপর। মিরাজের ১২ বলে ২৩ রানের সুবাদে পাওয়ার প্লেতে ৫৩ রান পায় বরিশাল। অন্যপ্রান্তে জাদরান ১০ বলে ১২ রান তুলেন।
১৩তম ওভারে বরিশালের রান ১শতে নিয়ে যান মিরাজ ও জাদরান। একই ওভারের পঞ্চম বলে পেসার রবিউলের শিকার হন ৫টি চারে ২৯ বলে ৪৩ রান করা মিরাজ। তৃতীয় উইকেটে ৫৮ বলে ৮৪ রান যোগ করে দলকে ভালোভাবে জয়ের পথে রাখেন মিরাজ-জাদরান।
১৫তম ওভারের শেষ দুই বলে চার-ছক্কা মেরে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে অস্টম হাফ-সেঞ্চুরি পুর্ন করেন জাদরান। পরের ওভারে রাজার দ্বিতীয় শিকার হন ৪১ বলে ৫২ রান করা এ ব্যাটার। তার ইনিংসে ৫টি চার ও ২টি ছয় মারেন জাদরান।
এমন অবস্থায় জয়ের জন্য শেষ ২৮ বলে ৩৫ রান দরকার পড়ে বরিশালের। পঞ্চম উইকেটে ২৪ বলে অবিচ্ছিন্ন ৩৮ রান তুলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন পাকিস্তানের ইফতেখার আহমেদ ও আফগানিস্তানের করিম জানাত। ইফতেখার ১৮ বলে ২৫ ও জানাত ১৪ বলে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন। রংপুরের রাজা ১৪ রানে ২ উইকেট নেন।