মঙ্গলবার কাতার বিশ্বকাপে শেষ ষোলর ম্যাচে নাটকীয় এক জয়ের মাধ্যমে স্পেনকে বিদায় করে কোয়র্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে মরক্কো। নির্ধারিত সময় ও অতিরিক্ত সময়ের ম্যাচ গোলশূন্য ড্র থাকার পর এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে পেনাল্টিতে ৩-০ গোলে জয়ী হয়ে মরক্কো শেষ আটে টিকিট পায়। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের শেষ আটে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে আফ্রিকান দেশটি। এর আগে ১৯৮৬ সালে একবারই নক আউটে খেলেছিল মরক্কো, যেখানে শেষ ষোল থেকেই তাদের বিদায় নিতে হয়েছিল।
পুরো ম্যাচে স্পেনকেই বেশী বল নিয়ে পজিশন নিতে দেখা গেছে। আর এটা মরক্কোর কৌশল ছিল বলেই জানিয়েছেন কোচ ওয়ালিদ রেগ্রাগুই। তার পরিবর্তে বিশেষ করে রক্ষণভাগ সামলানোর দিকেই বেশী মনোযোগী ছিল মরক্কো। তার ফলও পেয়েছে। পুরো ১২০ মিনিট তারা স্পেনকে গোল করতে দেয়নি। রেগ্রাগুই এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘বলের পজিশন না নেয়াটা আমাদের পরিকল্পনা ছিল। আমরা অকপটেই স্বীকার করে নিচ্ছি যে এখনো আমরা ফ্রান্স, জার্মান কিংবা ইংল্যান্ড হয়ে উঠতে পারিনি। পজিশনের দিক থেকে তাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার যোগ্যতা এখনো আমাদের হয়নি। তাদের কাছ থেকে বল কেড়ে নেবার মত কোন খেলোয়াড় আমার দলে নেই। সে কারনেই বল না পাবার বিষয়টি আমি মেনে নিচ্ছি। আমি কোন যাদুকর নই।’
মধ্যমাঠে সার্জিও বাসকুয়েটস, পেড্রি ও গাভি যাতে খুব বেশী সচল হতে না পারে সেজন্য চারদিন ধরে পুরো দলকে নিয়ে কাজ করেছেন রেগ্রাগুই। তিনি বলেন, ‘১২০ মিনিট যে কয়টি পাস তারা করেছে তাতে আমাদের সুযোগ খুব কমই ছিল। আমরা জানতাম না কিভাবে তাদের শাস্তি দেয়া যায়। আমাদের সুস্পষ্ট গেমপ্ল্যান ছিল, কোনরকমে তাদের রুখে দিয়ে ম্যাচটি পেনাল্টি পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া। এরপরের ফলাফল সম্পূর্ণই ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে, এটা লটারি। কিন্তু আমাদে গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো আজ অসাধারণ খেলেছে।’
মরোক্কান গোলরক্ষক কাল কার্লোস সোলার ও সার্জিও বাসকুয়েটসের শট রুখে দেন, পাবলো সারাবিয়ার শট পোন্টে লাগে। আর এতেই স্পেন তাদের নির্ধারিত পেনাল্টি শটের একটিতেও গোল করতে পারেনি।
মাদ্রিদে জন্ম নেয়া আচরাফ হাকিমির গোলে কাতারে মরক্কোর রূপকথার আরো একটি গল্প রচিত হয়। এর আগে গ্রুপ পর্বে বেলজিয়াম ও কানাডাকে হারিয়ে এবং ক্রোয়েশিয়ার সাথে ড্র করে শীর্ষ দল হিসেবে নক আউটের টিকিট পেয়েছিল উত্তর আফ্রিকান দলটি। চার ম্যাচে তারা মাত্র এক গোল হজম করেছে।
রেগ্রাগুই বলেন, ‘বিশ্বকাপ শুরুর সময় থেকে আমরা যে দলগুলোর বিপক্ষে খেলেছি তারা তাদের শতভাগ দিতে পারেনি। এ কারণেই আমরা এগিয়ে যাবার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমরা এমন একটি পরিবার তৈরি করেছিলাম যার ফলে আমাদের মনে হতো সব মানুষই আমাদের সাথে আছে। বিশ^কাপ শুরুর আগে আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হতো ক্রোয়েশিয়া, বেলজিয়াম ও কানাডার বিরুদ্ধে আমার পরিকল্পনা কি, তবে আমি হয়তো তেমন কিছুই কলতে পারতাম না। পুরো দলকে অনেক বড় একটি অভিনন্দন। তারা সত্যিই অসাধারণ খেলেছে।