হাই ভোল্টেজ কোয়ার্টার ফাইনালে আগামী শনিবার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচকে ঘিড়ে ইতোমধ্যেই উত্তেজনা শুরু হলেও দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ইংলিশ ফরোয়ার্ড বুকায় সাকা বলেছেন ফ্রান্সকে ভয় পাবার কোন কারনই নেই। কিলিয়ান এমবাপ্পের দূরন্ত ফর্মকে পুঁজি করে দাপটের সাথে শেষ আটে পৌঁছেছে ফ্রান্স। শিরোপা ধরে রাখার মিশনে এখন পর্যন্ত তারা সঠিক পথেই আছে।
পাঁচ গোল দিয়ে এখনো টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা এমবাপ্পে। আল বায়ত স্টেডিয়ামে শনিবারের শেষ আটের ম্যাচকে সামনে রেখে এমবাপ্পের এই ফর্ম ইতোমধ্যেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফ্রান্সকে ফেবারিট করে তুলেছে। এমনকি সেনেগালের বিপক্ষে শেষ ষোলতে ৩-০ গোলে জয়ের পর ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেট নিজেই বলেছেন ফ্রান্সের সাথে থ্রি লায়ন্সরা কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে যাচ্ছে। এটা ইংল্যান্ডের জন্য ‘এসিড টেস্ট’।
কিন্তু সেনেগালের বিরুদ্ধে গোল করা ইংলিশ ফরোয়ার্ড সাকার দাবী লেস ব্লুজদের মতই সমান শ্রদ্ধা ইংল্যান্ডেরও প্রাপ্য। মার্কোস রাশফোর্ডের পরিবর্তে মূল দলে জায়গা করে নেয়া সাকা বালেন, ‘আমরা তাদের মান সম্পর্কে জানি। কিন্তু আমরা নিজেদের মান সম্পর্কেও অবগত আছি। এ পর্যন্ত তিনটি ম্যাচে আমরা কোন গোল হজম করিনি। একইসাথে টুর্নামেন্টে আমরা সবচেয়ে বেশী গোল দিয়েছি। এখন টুর্নামেন্টে আমাদের প্রচুর অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে। গত কয়েকটি বড় আসরের ফলাফল যাচাই করলেই দেখা যাবে আমরা কোথায় আছি। আমরা সেমিফাইনাল ও ফাইনালে খেলেছি। সে কারনেই বড় দলের নাম এলে আমাদের নাম বলতেই হবে। আমাদের দলে এমন কিছু খেলোয়াড় আছেন যার জানেন কোন সময় কি করতে হবে। এই মুহূর্তে আমাদের অনুভূতিও ইতিবাচক পর্যায়ে আছে। অবশ্যই বিশ^কাপের শিরোপা জয়ে আমাদের নিজেদের ওপর আস্থা আছে।’
ফ্রান্সের আক্রমনভাগে এমবাপ্পে যে ফর্মে রয়েছে তাতে তাকে আটকাতে সাউথগেটের সেন্ট্রাল ডিফেন্সে তিনজন রাখতেই হবে। সাকা ফরাসিদের হুমকিকে মেনে নিয়ে বলেছেন, ‘এখানে শুধুমাত্র একজন এমবাপ্পে আছে। বর্তমানে সম্ভবত বিশে^র সেরা খেলোয়াড় সে। আমরা তার প্রতিভা সম্পর্কে জানি। তাকে আটকানোর জন্য আমরা প্রস্তুত। কিন্তু শুধুমাত্র তিনি নন, ফ্রান্সের অন্যান্য খেলোয়াড়রাও প্রতিভাবান। ম্যাচটি সত্যিকার অর্থেই দারুন কঠিন হবে। প্রথম চারটি ম্যাচে আমরা ভাল খেলেছি। এখন আমাদের সেই ক্ষুধা ধরে রাখতে হবে।’
চার ম্যাচে ১২ গোল করা ইংল্যান্ড ইতোমধ্যেই প্রমান করেছে বিশ^কাপের মত আসরে খেলার মত তারা কতটা যোগ্য, এমনটাই মনে করেন সাকা। ফ্রান্সের দিকে অতটা বেশী মনোযোগী না হয়ে নিজেদের স্বাভাবিক খেলার প্রতি গুরুত্ব দিতে সাকা আহবান জানিয়েছেন, ‘নি:সন্দেহে আমাদের দলের মান অনেক ভাল। অসাধারন একটি আক্রমনভাগ নিয়ে আমরা গর্ব করতেই পারি। আমি দলের কোচ নই, আমি খেলোয়াড়। গ্যারেথ এবং তার কোচিং স্টাফের উপর আমাদের সবার আস্থা রাখতে হবে। সম্ভাব্য সেরা গেম প্ল্যানই তারা আমাদের জন্য তৈরী করেছে। আমার মনে হয়না এখানে খুব বেশী পরিবর্তনের প্রয়োজন এছ। বড় আসরে সাউথগেটের রেকর্ড দুর্দান্ত। আমাদের এখন শুধুমাত্র সন্দেহ দুরে সড়িয়ে তার উপর বিশ^াস রাখতে হবে।’
১৯৮২ সালের পর এই প্রথমবারের মত বিশ^কাপে ফ্রান্সের মোকাবেলা করতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড। ম্যাচটি যদি টাই ব্রেকারে গড়ায় তবে ইউরোর দু:সময় কাটিয়ে নিজেকে এগিয়ে নিতে প্রস্তুত আছেন সাকা। ইউরোর ফাইনালে ইতালির বিরুদ্ধে সাকাসহ আরো দুইজন খেলোয়াড় ইংল্যান্ডের পেনাল্টি মিস করেছিলেন। সাকা বলেন, ‘অবশ্যই আমি আরো কিছুটা পরিনত হয়েছি। একইসাথে ঐ টুর্নামেন্টের পর আমার অনেক উন্নতি হয়েছে। ইউরোর ফাইনালের ব্যর্থতা আমি কখনই ভুলবো না। ঐ সময়ের পর থেকে যে পরিমান ভালবাসা আমি সমর্থকদের কাছ থেকে পেয়েছি তাতেই নিজেকে আরো বেশী পরিনত করে তুলেছি। আর্সেনালে আমি কখনই পেনাল্টি শট নেইনি। এবার যদি সেই মুহূর্ত আসে তবে আমি অনেক বেশী খুশী হবো।’