স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক জানিয়েছেন, স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট ১৯৭২-এ ওষুধ ভেজালকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান রয়েছে। এছাড়া যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ১৪ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদন্ড দেয়ার বিধানও রয়েছে।
তিনি আজ সংসদে ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য বেগম লুৎফুন নেসা খানের জনগুরুত্বপূর্ণ বিধি ৭১ এ আনীত এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে প্রায় ৯৮ শতাংশ ওষুধ তৈরি হয় এবং প্রায় ৬৩টি দেশে তা রপ্তানি করা হচ্ছে। তবে, ভেজাল ওষুধ নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করে থাকে ওষুধ প্রশাসন। ওষুধ প্রশাসনের অনেক ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে, যাতে কেউ নকল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করতে না পারে। ওষুধে ভেজাল হলে রোগী মৃত্যুমুখে পতিত হবে তো বটেই। শুধু তাই নয়, তার কিডনি ফেলিওর পর্যন্ত হতে পারে, নানাধরনের সমস্যা দেখা দেবে। এসব প্রতিরোধে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে ওষুধ ভেজালকারীদের অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করে ‘দি ড্রাগস অ্যাক্ট-১৯৪৮, ড্রাগস অর্ডিনেন্স-১৯৫৮ রোহিতকল্পে ওষুধ আইন-২০২২ এ একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। যা মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। যা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ আইনে যে ধারাগুলো রয়েছে- যারা লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ উৎপাদন করবে তাদের ১০ বছরের কারাদন্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা। লাইসেন্স ছাড়া ইন্টারনেটে বা যেকোনোভাবে ওষুধ বিক্রি করে তার জন্য ৫ লাখ টাকা জরিমানা ও ৫ বছরের কারাদন্ডের বিধান রাখা আছে। আর যদি লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ আমদানি করে তার জন্য ১০ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, ওষুধ প্রশাসন দ্বারা ড্রাগ আদালতে ১০১টি, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩০০টি, ভ্রাম্যমাণ আদালতে প্রায় আট হাজার মামলা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা, কারাদন্ড দেয়া হয়েছে ২০০ জনকে। ওষুধ জব্দ করা হয়েছে প্রায় ৮০ কোটি টাকার।
জাহিদ মালেক বলেন, ওষুধ প্রশাসনকে শক্তিশালী করার জন্য জনবল কাঠামো বাড়িয়ে ৩০০ থেকে ১ হাজারে উন্নীত করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় ড্রাগ পরিদর্শক আছেন, তারা এগুলো সবসময় পর্যবেক্ষণ করছেন। ফার্মেসিগুলো ভিজিট করছেন। ওষুধের মাননিয়ন্ত্রণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনাসহ বেশ কয়েকটি শহরে ল্যাব রয়েছে। সেখানে বাজার থেকে ওষুধ এনে পরীক্ষা করা হয়। অ্যালোপ্যাথি ওষুধ বাদে অন্য ওষুধ (যেমন- হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ ও ইউনানি) সব ওষুধ পরীক্ষা ও মান নির্নয় করা হয়। এ বিষয়ে ভেজাল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সেখানে আড়াই লাখ মামলা ও ১৩৬ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে ভেজাল ওষুধ তৈরির জন্য ২০টি কারখানা সিলগালা করা হয়েছে। তবে ভোজাল ওষুধ তৈরি, বিক্রি, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি, ভেজাল ওষুধ আমদানি করা না হয় তার জন্য আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’