নোয়াখাল জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্টিতব্য নির্বাচন স্থগিত করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট।
একইসঙ্গে ওই জেলা পরিষদের নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলাবক্স তাহের টিটুর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে তাকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে দেয়া হাইকোর্ট আদেশের বিরুদ্ধে আনা আবেদনের ওপর আগামী ১৮ অক্টোবর আপিল বিভাগের ফুলকোর্টে শুনানির জন্য ধার্য রাখা হয়েছে।
সু্প্িরমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম আজ এ আদেশ দেন। আদালতে টিটুর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। অপর প্রার্থীর পক্ষে ছিলেন এডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল আদালতের আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, নোয়াখালী জেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু। সেখানে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলাবক্স তাহের টিটু। লংকা বাংলা ফাইন্যান্সে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলাবক্স তাহের টিটুর কিছু বকেয়া ছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আলাবক্স তাহের টিটুর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ আদেশের বিরুদ্ধে তিনি চট্রগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে আপিল করলে সেখানেও টিটুর মনোনয়ন বাতিল আদেশ বহাল থাকে। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন টিটু। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট টিটুর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করে তাকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে আদেশ দেন। আদেশ অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তা টিটুকে আনারস প্রতীক বরাদ্দ দেন। অপর সপ্রার্থী আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু পান চশমা প্রতীক।
ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, হাইকোর্ট আদেশের পর রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চেম্বার জজ আদালতে সিভিল পিটিশন করলে তাতে ‘নো-অর্ডার’ হয়। আজ অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু চেম্বার কোর্টে এক আবেদন করে আলাবক্স তাহের টিটুকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে দেয়া হাইকোর্ট আদেশ স্থগিত চান। রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, আদালত উভয় পক্ষে শুনানি নিয়ে নোয়াখালী জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় নির্বাচন স্থগিত করেছেন। পাশাপশি টিটুর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে তাকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে দেয়া হাইকোর্ট আদেশের বিরুদ্ধে আনা আবেদনের ওপর আগামী ১৮ অক্টোবর আপিল বিভাগের ফুলকোর্টে শুনানির জন্য রেখেছেন।
ঋণখেলাপির অভিযোগে নোয়াখালী জেলা পরিষদের নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলাবক্স তাহের টিটুর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে ২৫ সেপ্টেম্বর আদেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে টিটুর মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন আদালত। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঋণখেলাপির অভিযোগে আলাবক্স তাহের টিটুর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান। এছাড়া সাধারণ সদস্যপ্রার্থী পাঁচজন ও সংরক্ষিত সদস্যপদে দুজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন জানান, চেয়ারম্যান প্রার্থী টিটু ঋণখেলাপি থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। পরে মনোনয়নপত্র বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে আপিল করেন টিটু। সেখানেও মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন তিনি।