উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রত্যেকের পরিবারকে ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেল সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।
রুলে দুর্ঘটনারোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে গত পাঁচ বছরে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনার সময় বিআরটি জনগণের নিরাপত্তার জন্য কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে তার একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুই মাসের মধ্যে বিবাদীদের এ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রত্যেককে ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে আজ এ রিট দায়ের করা হয়। রিটে গত পাঁচ বছরে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিআরটি কী ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে তার একটি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী জাকারিয়া খানের পক্ষে আইনজীবী শাহজাহান আকন্দ মাসুম এ রিট দায়ের করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন এবিএম শাহজাহান আকন্দ মাসুম।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল ও ডাইরেকশন দিয়েছেন। নিহতদের পরিবারকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত। পাশাপাশি বিআরটি প্রজেক্ট গত পাঁচ বছরে জনগণের নিরাপত্তার জন্য কী কী করেছে তা আগামী ৬০ দিনের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ সচিব, বিআরটি এর চেয়ারম্যানসহ ৫জন বিবাদীকে (রেসপনডেন্ট) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়াও গতকাল ১৬ আগস্ট ওই ঘটনায় আরেকটি রিট দায়ের করা হয়। ঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও জনগণের চলাফেরায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার নিশ্চিতের আর্জি পেশ করে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী এডভোকেট সাগুফতা তাবাসসুম আহমেদ রিটটি দায়ের করেন। স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়েছে।
সোমবার ১৫ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুইজন। নিহতরা হলেন- আইয়ুুব আলী হোসেন রুবেল (৫৫), ফাহিমা আক্তার (৩৮), ঝর্না আক্তার (২৭), ঝর্না আক্তারের দুই শিশু সন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (৪)। মঙ্গলবার বিকেলে মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সড়কে নিরাপত্তা প্রশ্নে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ব্যাপক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন।