আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যা মামলায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন শুটার সুমন শিকদার মুসা। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। রোববার শাহজাহানপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. শওকত আকবর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, তৃতীয় দফার রিমান্ড চলাকালে শুক্রবার মুসাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মুসা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার। আবেদনের প্রেক্ষিত বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এরআগে বুধবার (২২ জুন) মুসাকে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য মুসার বিরুদ্ধে ফের সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করে মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবি পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এরওআগে শুক্রবার (১৭ জুন) মুসাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মুসার বিরুদ্ধে ১২ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে ডিবি পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আহম্মেদ হুমায়ুন কবির চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
১০ জুন মুসাকে আদালতে হাজির করে তার বিরুদ্ধে ১৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে ডিবি পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দা তার ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
টিপু-প্রীতি হত্যার ঘটনায় বগুড়া থেকে গ্রেফতারকৃত শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মূল পরিকল্পনাকারী ও সমন্বয়কারী হিসেবে মুসার নাম আসে। পরে জানা যায়, মুসা ঘটনার আগেই ১২ মার্চ দেশ ছেড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত চলে যান। তার সন্ধান পেতে ৬ এপ্রিল পুলিশ সদরদপ্তরের এনসিবি শাখায় যোগাযোগ করা হয়।
পুলিশ সদরদপ্তর গত ৮ এপ্রিল মধ্যপ্রচ্যের বিভিন্ন দেশে ইন্টারপোলের মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু করে। এরই মধ্যে ৮ মে জানা যায়, মুসা দুবাই থেকে ওমানে প্রবেশ করেছেন। এনসিবির সহযোগিতায় গত ১২ মে ইন্টারপোলের ওমান পুলিশ মুসাকে গ্রেফতার করে। পরে ৯ জুন বাংলাদেশ পুলিশের একটি টিম ওমানে গিয়ে মুসাকে দেশে ফিরিয়ে আনে।
গত ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটা শো-রুমের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিও (১৯) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এ ঘটনায় টিপুর গাড়িচালক মুন্নাও গুলিবিদ্ধ হন।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের পর ওইদিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদি হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়।