লা লিগায় দারুন উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও আবারো দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। করিম বেনজেমরা ইনজুরি টাইমের গোলে রোববার সেভিয়ার বিপক্ষে ৩-২ গোলের জয় নিশ্চিত করেছে গ্যালাকটিকোরা।
মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে চেলসির বিপক্ষে ৩-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছিল মাদ্রিদ। সেই ম্যাচের অনুপ্রেরণায় গতকাল তৃতীয় স্থানে থাকা সেভিয়াকে পরাজিত করে লা লিগা শিরোপার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল কার্লো আনচেলত্তির দল। এই পরাজয়ে সেভিয়া বার্সেলোনার সাথে সমান ৬০ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় স্থানে থাকলো। টেবিলের শীর্ষে থাকা রিয়ালের থেকে তাদের পয়েন্টের ব্যবধান ১৫। বার্সার হাতে অবশ্য দুটি ম্যাচ বেশী রয়েছে।
দ্বিতীয়ার্ধে রডরিগো, নাচো ফার্নান্দেজ ও বেনজেমার গোলে মাদ্রিদের জয় নিশ্চিত হয়। লিগ শেষ করতে রিয়ালের হাতে রয়েছে আর মাত্র ৬ ম্যাচ। এর আগে রামোন সানচেজ পিজুয়ানে ইভান রাকিটিচের ফ্রি-কিক ও এরিক লামেলার দারুন ফিনিশিংয়ে ২৫ মিনিটেই মধ্যে ২-০ গোলের লিড নিয়েছিল সেভিয়া।
ম্যাচ শেষে রিয়াল বস আনচেলত্তি বলেছেন, ‘এটা বলা কঠিন যে প্রথমার্ধে আমরা কেন এভাবে খেলেছি এবং দ্বিতীয়ার্ধে আবারো ম্যাচে ফিরে এসেছি। প্রথমার্ধে আমাদের দেখে পরিশ্রান্ত মনে হয়েছে। কিন্তু বিরতির পর পূর্ণ উদ্যোমে মাঠে ফিরে এসেছিলাম।’
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে চেলসির বিপক্ষে মঙ্গলবারের ম্যাচে রডরিগোর গোলে মাদ্রিদ ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যায়। এরপর বেনজেমার গোলে জয় নিশ্চিত হয়। এই দুজনের সাথে ভিনিসিয়াস জুনিয়রও দলের জয়ে মূখ্য ভূমিকা রেখেছেন। কালও এই ত্রয়ী রিয়ালের জয়ের পথ সুগম করেছেন। এবারের মৌসুমে ৪৬ ম্যাচে ৪৪ গোল করলেন ফ্রেঞ্চম্যান বেনজেমা, শেষ ১০ ম্যাচে করেছেন ১৫ গোল।
২১ মিনিটে পাপু গোমেজকে ফাউলের অপরাধে লুকা মড্রিচের বিপক্ষে ফ্রি-কিক আদায় করে নেয় সেভিয়া। কার্লিং ফ্রি-কিকে সেভিয়াকে লিড এনে দেন রাকিটিচ। চার মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুন করেন লামেলা। ৫০ মিনিটে ভিনিসিয়াসের দুর্দান্ত ব্যাকহিলে ডানি কারভাহাল বল পেয়ে তা বাড়িয়ে দেন রডরিগোর দিকে। সেই বল থেকে রিয়ালের হয়ে এক গোল পরিশোধ করে ২১ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান এই এ্যাটাকার। ৭৪ মিনিটে সমতায় ফিরিয়েছিলেন ভিনিসিয়াস। কিন্তু ভিএআর প্রযুক্তি হ্যান্ডবলের কারনে তা বাতিল করে দেয়। ৮২ মিনিটে আবরো কারভাহালের সহায়তা নাচো রিয়ালকে সমতায় ফেরান। ৯২ মিনিটে রডরিগোর পাস থেকে তিনজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দারুন এক শটে রিয়ালকে জয় উপহার দেন বেনজেমা।
ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে শেষ মুহূর্তে ইয়ানিক কারাসকোর গোলে ১০জনের এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ ২-১ ব্যবধানে এস্পানেয়লকে পরাজিত করেছে। ম্যাচে এটাই ছিল শেষ কিক। জিওফ্রি কোনডোগবিয়া ৭১ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠত্যাগ করার তিন মিনিটের মধ্যে কারাসকোর গোল পরিশোধ করেন রাউল ডি টমাস। তখন মনে হচ্ছিল এ্যাথলেটিকো মনে হয় পয়েন্ট হারাতে যাচ্ছে। কিন্তু ইনজুরি টাইমের ১০ম মিনিটে ডি টমাসের হ্যান্ডবলে ভিএআর লম্বা সময় নিয়ে পেনাল্টির নির্দেশ দিলে স্বস্তি ফিরে আসে এ্যাথলেটিকো শিবিরে। স্পট কিক থেকে নিজের দ্বিতীয় ও দলের হয়ে জয়সূচক গোলটি নিশ্চিত করনে কোন ভুল করেননি অভিজ্ঞ কারাসকো।
ম্যাচ শেষে কারাসকো বলেছেন, ‘এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচ ছিল। শেষ শটটিতে গোল আদায় করাটা অনেকটাই সৌভাগ্যের।’
রিয়াল বেটিসের থেকে তিন পয়েন্ট এগিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানেই রয়েছে এ্যাথলেটিকো। তৃতীয় স্থানে থাকা সেভিয়ার সাথে দিয়েগো সিমিওনের দল সমান ৬০ পয়েন্ট অর্জণ করেছে।
গত সপ্তাহে মায়োর্কার কাছে পরাজিত হবার পর সপ্তাহের মাঝামাঝিতে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে পরাজিত হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নেয়া এ্যাথলেটিকোর সামনে আরো একটি হতাশার ম্যাচ উপস্থিত হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হতে দেননি বদলী খেলোয়াড় কারাসকো।