পাকিস্তান জয় থেকে মাত্র ২ রান দূরে থাকার সময় ১৯তম ওভারে লেগ-স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে আক্রমণে আনেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মাহমুদুল্লাহর এমন সিদ্ধান্ত অবাক করেছে অনেককেই।
মাহমুদুল্লাহ জানান, যেহেতু দুই বাঁ-হাতি ব্যাটার ঐ সময় ব্যাটিং করছিলেন, তাই বিপ্লবকে বোলিংয়ের জন্য আক্রমণে আনা হয়নি। তিনি বিশ্বাস করেছিলেন, লেগ-স্পিন ভালো কাজ করবে না।
মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘তাকে বোলিংয়ে আনার পরিকল্পনা আমাদের ছিলো, কিন্তু ঐ সময়ে দুই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান ব্যাট করছিলো। তাই আমরা ঐ পরিকল্পনা এড়িয়ে যাই এবং তার পরিবর্তে আমি বোলিং করতে এসেছি।’
মাহমুদুল্লাহ নিজেই ৩ ওভারে ১৯ রান দেন এবং উইকেটশূন্য ছিলেন। বাংলাদেশের বোলাররা চাপ সৃষ্টি করতে না পারায় পঞ্চম উইকেটে ৫৬ রানের জুটি গড়ে দলকে খেলায় ফেরান খুশদিল শাহ এবং ফখর জামান।
ছয় ওভার শেষে পাকিস্তানের রান ছিলো ৪ উইকেটে ২৪। বিশ্ব ক্রিকেটে ঐ সময়ই লেগ-স্পিনারদের জন্য ভালো সময় বলে মনে করা হয়।
কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটে এটি নিয়ম হয়ে গেছে, প্রতিপক্ষের বাঁ-হাতি ব্যাটারদের শুধুমাত্র অফ-স্পিনাররাই বোলিং করবে।
শেষ ওভারে আক্রমনে বিপ্লবকে আনা হয়। তার প্রথম ডেলিভারি কোন রান নিতে পারেননি পাকিস্তানের ব্যাটার শাদাব খান। কিন্তু পরের ডেলিভারিতে স্লগ সুইপ করে ছক্কা মেরে পাকিস্তানকে ৪ উইকেটে জয় এনে দেন শাদাব।
১০ বলে অপরাজিত ২১ রান করেন শাদাব। তার সঙ্গী মোহাম্মদ নাওয়াজ ৮ বলে অপরাজিত ১৮ রান করেন। চার বল বাকী রেখে বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেয়া ১২৮ রানের টার্গেট স্পর্শ করে ফেলে পাকিস্তান। দুই ব্যাটারই ১টি করে চার ও ২টি করে ছক্কা মারেন।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ এবং ভক্তদের ক্ষোভের কারণেই শুধুমাত্র বিপ্লবকে দলে নেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যারা লেগ স্পিনারের প্রতি বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার অভাবের সমালোচনা করেছিলেন।
যদিও এডাম জাম্পা, শাদাব খান, যুজবেন্দ্রা চাহাল, আদিল রশিদের মতো লেগ-স্পিনাররা বর্তমানে ক্রিকেটে সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে রাজত্ব করছেন। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে লেগিদের খেলার ব্যাপারে উদাসীনতা রয়েছে। কারন ক্লাব কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, লেগস্পিনার সীমিত ওভারে ক্রিকেটে রান আটকাতে পারবেন না।
যদিও ক্রিকেটের দিক থেকে কারণ ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছিলেন মাহমুদুল্লাহ, ফখর এবং খুশদিলের ম্যাচ জয়ী জুটির সময় কেন বিপ্লবকে বোলিংয়ে আনা হয়নি। তিনি জানান, ১০/১৫ রানের ঘাটতি তাদের জয়ের সুযোগকে হাতছাড়া করে।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি যখন আমরা প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তখন ব্যাট করার জন্য এটি বেশ ভালো উইকেট ছিল, কিন্তু বোলারদের জন্যও সাহায্য করেছিল।’
মাহমুদুল্লাহ আরও বলেন, ‘আশা করি, আগামীকাল আমরা আরও ভালো পরিকল্পনা নিয়ে খেলতে পারবো। ১৪০ পেলে ভালো হতো। কিন্তু ১২৭ রান করার পর আমরা ভেবেছিলাম, যদি শুরুতে আমরা দুই-একটি উইকেট পেতে পারি, যা আমাদের বোলাররা করেছে। তাসকিন-ফিজ-মেহেদি, তারা খুবই ভালো বল করেছে। এজন্য তাদের কৃতিত্ব দিতেই হবে।’