শিক্ষার্থীদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণে আজ প্রথম দিনে সারাদেশে একযোগে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম শেষ হবে ২৩ নভেম্বর। সকাল ১০ টায় শুরু হয়ে পরীক্ষা শেষ হয় সাড়ে ১১ টায়।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ পরীক্ষা শুরু হয়ে থাকলেও বৈশ্বিক মহামারি করোনা (কোভিড-১৯) সংক্রমনের কারণে সেই চেনা চিত্র বদলে যায় ।
প্রায় দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবার যথাসময়ে পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব হয়নি। বর্তমানে আক্রান্তের হার সহনীয় মাত্রায় আসায় পুর্নবিন্যাসকৃত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেড় ঘন্টাব্যাপী এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ তিনটি বিষয়ের উপর পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ বিষয়গুলোর ফলাফলের উপর মূল্যায়ন করে ফল প্রকাশ করা হবে।
চলতি বছরে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন পরীক্ষার্থী। মোট ৩ হাজার ৬৭৯ টি কেন্দ্রে এবারের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট ২৯ হাজার ৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। সারাদেশে ৯ টি সাধারণ বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি/দাখিল/এসএসসি(ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ১৮ লাখ ৯৯৮ জন পরীক্ষার্থী এবারের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। অন্যদিকে,৭১০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট ৩ লাখ এক হাজার ৮৮৭ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। ৭৬০টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ভোকেশনাল পরীক্ষা দিচ্ছে এক লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন।
২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে মোট পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন। এই বৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ। মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ১৫১টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ১৬৭ টি।
পরীক্ষার প্রথম দিনে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড,চট্টগ্রাম ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে প্রায় ১১ হাজার পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। এদিকে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অভিভাবক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
চলতি বছরে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের গ্রুপ ভিত্তিক বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যানে দেখা গেছে-বিজ্ঞান বিভাগে-ঢাকা বোর্ডে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৪৩১ জন, রাজশাহী বোর্ডে ৮১ হাজার ২২৪ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৫৪ হাজার ৫৮৩ জন, যশোর বোর্ডে ৩৭ হাজার ৬০১ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৩১ হাজার ৫৭ জন, বরিশাল বোর্ডে ২৫ হাজার ১১২ জন, সিলেট বোর্ডে ২১ হাজার ৬২৩ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ৭৯ হাজার ৩৬৫ জন ও ময়মনসিংহ বোর্ডে ৪১ হাজার ৮৩৫ জন পরীক্ষা দিচ্ছে।
মানবিক বিভাগে-ঢাকা বোর্ডে ২ লাখ ৯৫৭ জন, রাজশাহী বোর্ডে ১ লাখ ১৪ হাজার ৭২৫ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৮৯ হাজার ৩৬১ জন, যশোর বোর্ডে ১ লাখ ১৭ হাজার ১০৯ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৬৫ হাজার ১৫৭ জন, বরিশাল বোর্ডে ৫৯ হাজার ৬৫৬ জন, সিলেট বোর্ডে ৮৯ হাজার ৯৩৩ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ১ লাখ ৯ হাজার ৭০৬ জন ও ময়মনসিংহ বোর্ডে ৭৭ হাজার ৪৮১ জন পরীক্ষা দিচ্ছে।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে-ঢাকা বোর্ডে ১ লাখ ৪০ হাজার ৭১২ জন, রাজশাহী বোর্ডে, ১১ হাজার ৬১৯ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৮০ হাজার ৯৩০ জন, যশোর বোর্ডে ২৬ হাজার ৫৭২ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৬৪ হাজার ৭১১ জন, বরিশাল বোর্ডে ২০ হাজার ২২২ জন, সিলেট বোর্ডে ৯ হাজার ৫৫৫ জন, দিনাজপুর বোর্ডে ৪ হাজার ৩৭৫ ও ময়মনসিংহ বোর্ডে ১১ হাজার ৩৮৬ জন পরীক্ষা দিচ্ছে ।
বিজ্ঞান বিভাগে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ লাখ ৬ হাজার ৮৩১ জন, মানবিকে ৯ লাখ ২৪ হাজার ৮৫ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮২ জন পরীক্ষা দিচ্ছে ।
২০২১ সালের সংশোধিত ও পুর্নবিন্যাসকৃত সিলেবাসে গ্রুপভিত্তিক ৩টি নৈর্র্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা হয়। নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞানও খেলাধূলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়ে এনসিটিবির নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করছে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরের সাথে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর অনলাইনে বোর্ডে পাঠাবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার প্রথম দিনে ঢাকা বোর্ডের অধীনে ৪২৩ টি কেন্দ্রে ১ লাখ ২৮ হাজার ৮০৭ জন অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও অংশ গ্রহণ করেছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ৯২৩ জন। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ২০৪ টি কেন্দ্রে ২৮ হাজার ৩৩৭ জনের মধ্যে ২৮ হাজার ১৪৩ জন উপস্থিত ছিলেন। এ শিক্ষা বোর্ডে ১৯৪ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন।
বরিশাল বিভাগে ২৩ হাজার ৬১৭ জন।অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৩ হাজার ৪৪৫ জন। ১৭২ জন অনুপস্থিত ছিলেন।
সিলেটে মোট পরীক্ষার্থীর ১৯ হাজার ৮৭৩ জন। অংশ গ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৯ হাজার ৭২৫ জন। অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪৮ জন।
দিনাজপুরে মোট পরীক্ষার্থী ৭৭ হাজার ৯১২ জন। এরমধ্যে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থী ৭৭ হাজার ৩১৫ জন। অনুপস্থিত ৫৯৭ জন। বহিষ্কার হয়েছে ১ জন।
মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৩৭১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৪৭৭ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ ছাড়াও জেদ্দা, রিয়াদ, ত্রিপোলি, দোহা,আবুধাবি, দুবাই, বাহরাইন, ওমানের সাহাম ও গ্রিসের এথন্সে (৮টি দেশে) ৪২৯ জন পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।