অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাংলাদেশের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জণে জাতিসংঘ বরাবরের মত আগামীতেও সর্বদা সহযোগিতা দিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তিনি বাংলাদেশে জাতিসংঘের বিদায়ী আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় তারা অর্থনৈতিক অগ্রগতি, কোভিডকালিন অর্থনীতি ও এর পুণরুদ্ধার, কর্মসংস্থান, নারীর ক্ষমতায়ন ও সমতা অর্জনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
সৌজন্য সাক্ষাৎকালে অর্থমন্ত্রী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশে উন্নতি হবে বলে দৃঢ় আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, জাতির পিতার অর্থনৈতিক দর্শন অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশে গত এক দশকে গড়ে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ হারে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।এমনকি কোভিডকালে গত বছর যেখানে বৈশ্বিক অর্থনীতি ৩ শতাংশ সংকোচন হয়েছে, সেখানে এই ক্রান্তিকালেও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচটি সহনশীল অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সভার টেকসই উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্মেলন ২০২১-এ বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেস্টাকে স্বীকৃতি প্রদানে প্রধানমন্ত্রীকে এসডিজি প্রগ্রেসেস অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, নারীর কর্মস্থান ও ক্ষমতায়নের প্রশংসা করেন এবং আগামীতে বাংলাদেশের সাথে জাতিসংঘের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের দীর্ঘ কূটনৈতিক সুসম্পর্কের ধারাবাহিকতা উল্লেখ করে বলেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে জাতিসংঘ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে মিয়া সেপ্পো জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে চার বছরের কর্মকাল তার জীবনে উজ্জ্বল স্মৃতি হয়ে থাকবে। তিনি ঢাকায় অবস্থানকালে সার্বিক সহযোগিতার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান।
এছাড়া অর্থমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইলি আজ সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় অর্থমন্ত্রী স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ পরবর্তীতে বাংলাদেশের জন্য প্রদত্ত বাণিজ্যিক অগ্রাধিকার সুবিধাি অব্যাহত রাখার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানান।
মুস্তফা কামাল বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সমন্বিতভাবে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের সর্ববৃহৎ গন্তব্য। বাংলাদেশ বিনিয়োগের অন্যতম আকর্ষনীয় স্থান। বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তারা বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম আস্থাশীল অংশীদারে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে অর্থমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইলি বলেন, বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের প্রতি ইইউয়ের সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, ২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পলিটিক্যাল, ইকোনোমিক, ট্রেড, প্রেস, এবং ইনফরমেশন বিভাগের প্রধান হিসাবে থাকাকালিন তখনকার তুলনায় বর্তমান বাংলাদেশের উন্নয়ন আমাকে অভিভূত করেছে।