বাংলাদেশে নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ফাম ভিয়েট চিয়েন বলেছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশ হচ্ছে ভিয়েতনামের দ্বিতীয় বৃহত্তম ট্রেডিং পার্টনার এবং উভয়দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কোন্নয়ন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উভয় দেশের বেসরকারি খাত বিশেষ করে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সমাজের সাথে পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়নে চিটাগাং চেম্বার বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।
ভিয়েতনাম থেকে আগত বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সাথে গতকাল ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চিটাগাং চেম্বার নেতৃবৃন্দের এক মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ফাম ভিয়েট চিয়েন এ কথা বলেন।
দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, পরিচালক নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিভিসিসিআই) সভাপতি এসএম রহমান, চিটাগাং চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ ও পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, ওওসিএল’র জেনারেল ম্যানেজার ক্যাপ্টেন গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী, ক্যাশো গ্রোয়ার্স প্রসেসরস্ এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হারুন, ভিয়েতনাম বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে লী থাই হাই ও ফাম ভ্যান লোয়ান বক্তব্য রাখেন।
ভিয়েতনাম রাষ্ট্রদূত ফাম ভিয়েট চিয়েন চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক কেন্দ্র উল্লেখ করে বলেন, এদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এক্ষেত্রে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের ভিয়েতনাম ভ্রমণ করে সঠিক ব্যবসায়িক অংশীদার খুঁজে বের করার অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত। তিনি আগামী দিনে ভিয়েতনাম থেকে পণ্যাদি আমদানির পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বৃদ্ধিরও প্রত্যাশা করেন। রাষ্ট্রদূত ফাম ভিয়েট চিয়েন উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আরো সহজীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং দু’পক্ষের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে দূতাবাসের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম বলেন, ২০১৯ সালে ভিয়েতনাম থেকে ৬৯৪ মিলিয়ন ডলারের আমদানির বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি মাত্র ৭১.৩ মিলিয়ন ডলার। এ বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি পূরণে বাংলাদেশি রপ্তানি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। ভিয়েতনামে বাংলাদেশি পণ্য তেমন সুপরিচিত নয়। তাই ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশের মাধ্যমে বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে বছরে ২ থেকে ৩ বার বাংলাদেশি পণ্যের প্রদর্শনী আয়োজন করা হলে তা সহায়ক হবে। এক্ষেত্রে উভয় সরকারের পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হলে বেসরকারি খাত তার সদ্ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া উভয় বেসরকারি খাতের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি, আরএমজি খাতে অভিজ্ঞতা ও কারিগরি সহযোগিতা বিনিময়ের মাধ্যমে মূল্য সংযোজন, দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টিতে কারিগরি ও কর্মমুখী শিক্ষার কর্মসূচি বিনিময়, সমুদ্র অর্থনীতি ও পর্যটন খাতের উন্নয়নে সহযোগিতা প্রদান এবং বাংলাদেশে ভিয়েতনামের বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহবান জানান চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম।
রাষ্ট্রদূত ও বাণিজ্য প্রতিনিধিদল মতবিনিময় সভার পূর্বে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের পারমানেন্ট এক্সিবিশন হল পরিদর্শন করেন।