প্রথম দুই ম্যাচে হতাশাজনক হারের পর প্রথম জয়ের লক্ষ্যে আগামীকাল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। একই অবস্থা ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও। সুপার টুয়েলভে প্রথম দুই ম্যাচেই পরাজিত হয়েছে ক্যারিবিয়রা। তাই জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ উভয় দলই।
বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি সরাসরি দেখাবে গাজী টিভি ও টি-স্পোটর্স।
সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার কাছে ৫ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটে হারে। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারলে সেমিফাইনালে খেলার আশা শেষ হয়ে যাবে টাইগারদে। অন্য দিকে একই অবস্থা ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও। সুতরাং সেমির আশা টিকিয়ে রাখতে জয় ছাড়া বিকল্প নেই দুই দলেরই।
তবে ২০০৭ সালে টি-টোয়ন্টি বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একমাত্র জয়টি বাংলাদেশকে উদ্বুদ্ধ করবে। এরপর থেকে ক্রিকেটের তৃতীয় বড় ইভেন্টে বাছাই পর্বের বাইরে কোন জয় তুলে নিতে পারেনি বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দু’টিসহ তিনটি সিরিজ জয়ের পর এবার তারা ভালো কিছু করতে পারবে বলে আশা করা হয়েছিলো।
বাছাই পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে হোচট খায় বাংলাদেশ। তবে পরের ম্যাচগুলোতেম ঘুড়ে দাঁড়ায় টাইগাররা। ওমান ও পাপুয়া নিউ গিনিকে হারিয়ে পরের রাউন্ড নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। কিন্তু সুপার টুয়েলভে আবারো হারের বৃত্তে প্রবেশ করে টাইগাররা।
দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর ব্যাটিং পরিকল্পনা পুনর্মূল্যায়নের উপর জোর দিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিং উপযোগি উইকেট পেয়েও ৯ উইকেটে ১২৪ রানের বেশি করতে পারেনি টাইগাররা। বাংলাদেশের ছুঁেড় দেয়া টার্গেট সহজেই স্পর্শ করে জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড।
মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘অবশ্যই আমরা ব্যাটিং নিয়ে হতাশ। এটি ভাল উইকেট ছিল, কিন্তু আমরা শুরুটা ভাল করিনি এবং মাঝে কোন পার্টনারশিপও ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের শুরুটা ভালো হয়নি। এই উইকেটে পরবর্তীতে খেলা কঠিন হয়ে পড়ে। আমাদের পাওয়ার হিটারের চেয়ে বেশি দক্ষ হিটার আছে। আমরা এটি পরিবর্তন করতে চাই না। কারণ আমাদের বিশ্বাস আমরা ভাল সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারি। কিন্তু আমাদের পুনরায় মূল্যায়ন করতে হবে এবং একটি ভাল পরিকল্পনা নিতে হবে।’
বাংলাদেশের মত ওয়েস্ট ইন্ডিজও নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে হেরেছে। ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ হারে তারা। এতে সেমিফাইনালের আগে বাংলাদেশের মত টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে তারা।
দলের দারুন সব পাওয়ার হিটার থাকা সত্বেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৫৫ রানে অলআউট হয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৮ উইকেটে ১৪৩ রানের সংগ্রহ পায় ক্যারিবীয়রা।
বাংলাদেশের ধারাবাহিকতার অভাব থাকলেও, ওয়েস্ট ইন্ডিজ অপ্রস্তুত ও অঘোছালো দেখিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে ক্যারিবীয়দের হারানোর এটাই ভালো সুযোগ।
পরিসংখ্যান বলছে, এই ফরম্যাটে অন্য যেকোন শীর্ষ দলের চেয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে বাংলাদেশের সাফল্যের হার বেশি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২ ম্যাচে টাইগাররা পাঁচটিতে জিতেছে। হেরেছে ছয়টিতে। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরমেন্স আশানুরুপ নয়। এখন পর্যন্ত ১১৭ ম্যাচে ৪৩টি জিতেছে তারা। ৭২ ম্যাচে হার ও দু’টি পরিত্যক্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বিশ্বকাপে ২৯টি ম্যাচ খেলেছে এবং মাত্র সাতটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে বাছাই পর্ব থেকেই ছয়টি জয় এসেছে।
বাংলাদেশ দল : মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, আফিফ হোসেন, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, নুরুল হাসান সোহান, শামীম হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, রুবেল হোসেন, শরিফুল ইসলাম, শেখ মাহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ ও তাসকিন আহমেদ।