মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিভিন্ন অভিযোগে দুটি মামলায় ১৭ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
একটি মামলা কুড়িগ্রামে সংঘটিত অপরাধে। এটিতে আসামি ১৩ জন। অপরটি সাতক্ষীরায়। এখানে আসামি চারজন।
দুই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে শিগগিরই জমা দেয়া হবে বলে আজ জানিয়েছেন তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক সানাউল হক। রাজধানীর ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এই বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সানাউল বলেন, এ দুটি মামলা নিয়ে এখন পর্যন্ত ৮০টি মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে।
কুড়িগ্রামের মামলাটির আসামি ১৩ জন। এর মধ্যে ১১ আসামিকে গত বছর ৯ মার্চ গ্রেফতার করা হয়। এরা সবাই কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার। পলাতক দুই আসামি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামিরা উলিপুর ও রাজাহাট থানা এলাকায় অপরাধ সংঘটন করে। এসময় তারা মোট ৭৪৫ জনকে হত্যা করে। তাদের হামলা-আক্রমণে ৭০ থেকে ৭৫ জন আহত হয়। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২ জন। এছাড়া ২৬০ থেকে ২৭০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে, লুটপাট চালায় ৮০ থেকে ৯০টি বাড়িতে।
এ মামলাটি তদন্ত করেছেন মো. রুহুল আমিন। তিনি ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি মামলাটির তদন্ত শুরু করেন। তদন্তের সময় ১১১ জনের বক্তব্য শোনেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তার মধ্যে ৭ জনকে সাক্ষী করা হয়। ৩৭৫ পাতার প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে ৩ খন্ডে। এ মামলাটি তদন্ত সংস্থার সর্বশেষ অর্থাৎ ৮০তম তদন্ত প্রতিবেদন
সাতক্ষীরার মামলাটিতে মোট চারজন আসামি। এর মধ্যে এক আসামিকে ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়। বাকি তিন আসামি পলাতক।
এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
আকবর আলী শেখসহ আসামিরা মুক্তিযুদ্ধের সময় সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ ও দেবহাটা এলাকায় সাতজন নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করে। তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে হিন্দু জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করতে দেবহাটা ধানার হাদিপুর ঘোষ বাড়িতে হামলা, নির্যাতন, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগও করে। এ মামলাটি তদন্ত সংস্থার ৭৯তম তদন্ত প্রতিবেদন।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহান কবীর। তিনি ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর তদন্ত শুরু করেন। এক বছর ১০ মাসের তদন্তে ৫০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ১৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এছাড়া ১১১ পাতার নথি সংগ্রহ করা হয়েছে। ১৭৫ পাতার তদন্ত প্রতিবেদনটি চার খন্ডে প্রস্তুত করা হয়েছে।