মুজিব শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে বৈশি^ক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অধিকতর অংশগ্রহণ ও বিনিয়োগ আকর্ষনের লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) যৌথভাবে সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলন আয়োজন করবে।
আগামী ২৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। ১ নভেম্বর পর্যন্ত সম্মেলন চলবে।
রোববার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান এসব তথ্য জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বক্তব্য রাখেন।
রিজওয়ান রাহমান জানান, সম্মেলনে অবকাঠমো,আইটি ও আইটিইএস এবং ফিনটেক, লেদারগুডস্, ফার্মাসিউটিক্যাল, অটোমোটিভ অ্যান্ড লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, প্লাস্টিক পণ্য, এগ্রো অ্যান্ড ফুড প্রসেসিং, জুট অ্যান্ড টেক্সটাইল,এফএমসিজি অ্যান্ড রিটেইল বিজনেস প্রভৃতি খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করা হবে। বাণিজ্য সম্মেলনে বাংলাদেশসহ বিশে^র ৩৮টি দেশের মোট ৫৫২টি কোম্পানী সপ্তাহব্যাপী ৪৫০টি বিটুবি’তে অংশগ্রহণ করবে, যার মাধ্যমে নতুন বিনিয়োগ ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ভার্চুয়াল বাণিজ্য সম্মেলনকালে বিদেশি বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের নিকট কোভিড মহামারীর সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রস্তুুতির বিষয় তুলে ধরা হবে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ আয়োজন পিপিপি মডেলের একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। এখানে বাংলাদেশকে উন্নত অর্থনীতির দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুুতি ও নীতি সহায়তার বিষয়সমূহ তুলে ধরা হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎসহ অন্যান্য অবকাঠামোখাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে, যার সুবিধা নিয়ে আমাদেরকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষনে আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, স্বল্পন্নোত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণ পরবর্তী সময়ে আমরা অনেক সুবিধা প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হবো, সে পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদেরকে এখনই উদ্যোগী হতে হবে এবং এ লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে সম্ভাব্য দেশগুলোর সাথে এফটিএ, পিটিএ স্বাক্ষরসহ নানাবিধ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাণিজ্য সম্মেলন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে সক্ষম হবে, যা আমাদের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে।
টিপু মুন্সী বলেন,আমাদের রপ্তানিখাত বেশিমাত্রায় তৈরি পোষাক নির্ভর, এখন অন্যান্য খাতগুলোকে নিয়ে কাজ করার সময় এসেছে। বাণিজ্য সম্মেলনে সম্ভাবনাময় ৯টি খাতের উপর আলোকপাত করা হবে।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বাণিজ্য সম্মেলনটি সরকার ও বেসরকারিখাতের সমন্বয়ের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ, যার মাধ্যমে ৫টি মহাদেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক উদ্যোক্তাদের জন্য বিটুবি সেশনে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ সম্মেলনের মাধ্যমে বর্হিবিশে^ বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের সক্ষমতা তুলে ধরা হবে, যার মাধ্যমে আরও বেশি হারে বিনিয়োগ আকর্ষন সম্ভব।
সম্মেলনে ‘বাংলাদেশ ও ইউরোপের অর্থনীতি : নতুন নীতি কাঠামো’, ‘এলডিসি হতে বাংলাদেশের উত্তরণ ও প্রস্তুুতি’, ‘মধ্যপ্রাচ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সহযোগিতা’, ‘এশিয়া-প্যাসিফিক ও বাংলাদেশ: অর্থনৈতিক সম্ভাবনা’, ‘বাংলাদেশ ও আফ্রিকার মধ্যকার বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সহযোগিতা: নতুন দিগন্তের সম্ভাবনা’ এবং ‘বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নে সহায়ক ঋণ প্রক্রিয়া’ শীর্ষক ৬টি ওয়েবিনার আয়োজন করা হবে, যেখানে সংশ্লিষ্ট খাতের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করবেন।
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।