বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ আছে এবং সরবরাহও স্বাভাবিক রয়েছে। পাশাপাশি ভারত ও মিয়ানমার থেকে নিয়মিত পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। তাই পেঁয়াজ নিয়ে আতংকিত হবার কোন কারণ নেই।
সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ, সরবরাহ ও আমদানি পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে আয়োজিত সভাশেষে তিনি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কোন ধরনের কারসাজির মাধ্যমে কেউ অতি-মুনাফার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী ভার্চুয়ালি এই প্রেস ব্রিফিংয়ে যুক্ত হন। সভায় বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ সভাপতিত্ব করেন।
টিপু মুনশি বলেন, ‘দেশীয় প্রায় পাঁচ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে। টিসিবি ৩০ টাকা কেজি দরে ৪০০ ট্রাক সেলের মাধ্যমে প্রতিদিন পেঁয়াজ বিক্রি করছে। সুতরাং পেঁয়াজ নিয়ে আতংকিত হবার কারণ নেই।’
তিনি আরো বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে গ্রীষ্মকালীন নতুন পেঁয়াজ বাজারে চলে আসবে।
এই এক মাস পেঁয়াজের মূল্য যেন স্বাভাবিক রাখা যায়- সেজন্য ব্যবসায়ীদের সততা ও আন্তরিকতার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করার আহবান জানান তিনি।
টিপু মুনশি বলেন, পেঁয়াজের আমদানি সহজ ও দ্রত করার জন্য ইতোমধ্যে বিদ্যমান পাঁচ ভাগ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের পাশাপাশি বন্দরে দ্রুত খালাসের বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ করা হয়েছে। আশা করি- আগামী ৩ থেকে ৪ মাসের জন্য আমদানি-শুল্ক প্রত্যাহার করে রাজস্ব বোর্ড প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, সমগ্র চাহিদার ৮০ ভাগ পেঁয়াজ দেশে উৎপাদিত হয় এবং ২০ ভাগ বিদেশ বিশেষ করে ভারত থেকে আমদানি করা হয়। কিন্তু অতি-বৃষ্টির কারণে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়েছে।
তিনি বলেন, ভারতে যতটুকু মূল্য বেড়েছে, সেখানকার আমদানি করা পেঁয়াজের মূল্য প্রকৃতপক্ষে ততটুকুই বাড়তে পারে। কিন্তু কেউ যদি অতি-মুনাফার চেষ্টা করেন, তাহলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাণিজ্য সচিব আরো বলেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে কঠোর তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আমদানিকৃত পেঁয়াজের কোয়ারেন্টাইন পরীক্ষা দ্রুত সম্পন্ন করে আইপি ইস্যুকরণের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন মো. মফিজুল ইসলাম, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল হাসান, এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, মৌলভী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. গোলাম মওলাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।