চট্টগ্রামে করোনায় মৃত্যুশূন্য দিনে সর্বনিম্ন সংক্রমণ হার রেকর্ড হয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ২১ জন নতুন আক্রান্ত হন। আক্রান্তের হার ১ দশমিক ১৬ শতাংশ।
চট্টগ্রাম জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আজকের রিপোর্ট থেকে এ সব তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাব ও নগরীর সাত ল্যাবে গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৮১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ২১ জনের মধ্যে শহরের ১২ জন এবং পাঁচ উপজেলার উপজেলার ৯ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১ লাখ ১ হাজার ৯৯২ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের ৭৩ হাজার ৮২০ জন ও গ্রামের ২৮ হাজার ১৭২ জন। উপজেলা পর্যায়ে গতকাল শনাক্ত ৯ জনের মধ্যে হাটহাজারীতে ৪ জন, সীতাকু-ে ২ জন এবং লোহাগাড়া, সাতকানিয়া ও বোয়ালখালীতে ১ জন করে রয়েছেন।
চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৩১০ জন রয়েছে। এর মধ্যে ৭২০ জন শহরের ও ৫৯০ জন গ্রামের।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার আজ জানান, ‘করোনাভাইরাসের আজকের সর্বনিম্ন সংক্রমণ হার নিঃসন্দেহে স্বস্তিদায়ক। তবে এতে এখনই তৃপ্তির ঢেকুর তুলে সবকিছু স্বাভাবিক ভাবার কোনো সুযোগ নেই। সাধারণ মানুষ করোনার স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মেনে চললে আমরা করোনাভাইরাসের প্রকোপ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবো। আমার অনুরোধ থাকবে, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার এ অর্জনকে ধরে রাখার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিধি-বিধানগুলো যেন আমরা অনুসরণ করি।’
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াস হোসেন বাসস’কে বলেন, ‘চট্টগ্রামের সংক্রমণ হার জাতীয় চিত্রের তুলনায় ভালো। ভবিষ্যতে আরো ভালো পরিস্থিতির জন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক রাখা, স্যানিটাইজারের ব্যবহার এবং জনসমাগম এড়িয়ে চললে করোনা নির্মূল হবে। পাশাপাশি সবাইকে করোনার টিকার আওতায় আসতে হবে।’
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৬৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষা হয় ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে। এখানে শহরের ৪ ও গ্রামের ১ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৫৬ টি নমুনার মধ্যে শহরের ৪ ও গ্রামের ৫ টিতে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়।
বেসরকারি ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৫৬৪ নমুনা পরীক্ষা করা হলে সবগুলোর রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২৬৬ নমুনায় গ্রামের একটি, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১৪০ টি নমুনার মধ্যে শহর ও গ্রামের একটি করে, মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ৮ নমুনা পরীক্ষায় শহরের একটি এবং এপিক হেলথ কেয়ারে ২৮ নমুনার মধ্যে শহরের ২ ও গ্রামের একটিতে ভাইরাস থাকার প্রমাণ মিলেছে। ল্যাব এইডে ৪ টি এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চট্টগ্রামের ২ টি নমুনার একটিতেও জীবাণুর অস্তিত্ব মিলেনি।
এদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরি ও এন্টিজেন টেস্টে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ০ দশমিক ৭৭ শতাংশ, সিভাসু’তে ৫ দশমিক ৭৭, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ০ দশমিক ৩৭, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ১ দশমিক ৪৩, মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ১২ দশমিক ৫০, এপিক হেলথ কেয়ারে ১০ দশমিক ৭১ এবং শেভরনে, ল্যাব এইড ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।