কিংস্টন টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় জয় পেয়েছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ উইকেট জুটিতে কেমার রোচ ও জেইডেন সিলেসের ১৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে পাকিস্তানকে ১ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার টেস্টে পাকিস্তানকে ১ উইকেটে হারালো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথমটি ছিলো ২০০০ সালে, সেন্ট জোন্সে।
১৬৮ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৫১ রানের মধ্যে ৯ উইকেট হারিয়ে বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ অবস্থায় ম্যাচ জয়ের চিন্তাও হয়তো করেনি ক্যারিবীয়রা। আর ১টি উইকেট শিকারের অপেক্ষা, যেন তড় সইছিলো না পাকিস্তানের। কিন্তু পাকিস্তানের বোলারদের বিপক্ষে রুখে দাঁড়ান শেষ দুই ব্যাটসম্যান রোচ ও সিলেস। জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়লেন তারা।
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় আসরে এটি পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ম্যাচ ছিলো। ম্যাচ জয়ে ১২ পয়েন্ট পেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুন্য হাতে মাঠ ছাড়লো পাকিস্তান।
তৃতীয় দিন শেষে ৫ উইকেটে ১৬০ রান করেছিলো পাকিস্তান। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে লিড ছিলো ১২৪ রানের। অধিনায়ক বাবর আজম ৫৪ ও ফাহিম আশরাফ ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
বাবর ৫৫ ও ফাহিম ২০ রান করে ফিরেন। শেষদিকে হাসান আলির ২৮ রানে পাকিস্তানের স্কোর ২শ পেরোতে পারে। এতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৬৮ রানের টার্গেট দিতে সক্ষম হয় পাকিস্তান। এই ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সিলেস ৫ উইকেট নেন। এতে ৭১ বছরের পুরনো রেকর্ড ভাঙ্গলেন সিলেস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে ৫ উইকেট নিলেন তিনি। ১৯ বছর ৩৩৬ দিনে ৫ উইকেট নিলেন তিনি। আগের রেকর্ডটি ছিলো স্পিনার অ্যালফ ভ্যালেন্টাইনের। ১৯৫০ সালে ২০ বছর ৪১ দিনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের এক ইনিংসে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন ভ্যালেন্টাইন। এছাড়া ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি।
১৬৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৬ রানের মধ্যে উপরের সারির তিন ব্যাটসম্যানকে হারায় তারা। তিনটি উইকেটই নেন পাকিস্তানের পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি।
এরপর ৬৮ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কা সামলে উঠেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান রোস্টন চেজ ও জার্মেই ব্ল্যাকউড। চেজ ২২ রানে আউট হলেও, টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৫তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন জার্মেই ব্লাকউড।
পরের দিকে কাইল মায়ার্স শুন্য, জেসন হোল্ডার ১৬, উইকেটরক্ষক জসুয়া ডা সিলভা ১৩ ও জোমেল ওয়ারিকান ৬ রান করে ফিরলে, ম্যাচ নিয়ে চিন্তায় পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কারন শেষ উইকেট বাকী থাকতে ১৭ রান দরকার ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের। শেষ উইকেটে দায়িত্ব নিয়ে দলের প্রয়োজন মিটিয়েছেন রোচ-সিলেস।
৫২ বলে ২টি চারে অপরাজিত ৩০ রান করেন রোচ। ২ রানে অপরাজিত থাকেন সিলেস। পাকিস্তানের আফ্রিদি ৫০ রানে ৪ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন সিলেস।
আগামী ২০ আগস্ট কিংস্টনে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।