চট্টগ্রামে ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হচ্ছেন আরও অনেকে। করোনার মহামারি ভেতর ডেঙ্গুর চোখ রাঙানি ভাবিয়ে তুলছে নগরবাসীদের।
ডেঙ্গু মোকাবেলায় মশার ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে এবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) গবেষকদলের প্রতিবেদন হস্তান্তর করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) এর মেয়রের কাছে।
এই প্রতিবেদন কাজে লাগিয়ে মাঠে নামছে চসিক। চট্টগ্রাম নগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে বুধবার (৪ আগস্ট) থেকে মশক নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু করতে যাচ্ছেন তারা।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় মশার ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর কাছে চবি গবেষক দলের প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার এর নেতৃত্বে গবেষক দল।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। এ সময় গবেষকদলের সদস্য, কাউন্সিলর ও চসিকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় চবির গবেষণা প্রসঙ্গে মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ফগার মেশিন দিয়ে এত ওষুধ ছিটানোর পরও নগরবাসীরা বলেন মশার কামড়ে অতিষ্ঠ। এরপর চিন্তা করলাম ওষুধের কার্যকারিতা নির্ণয়ের। চবি উপাচার্যকে অনুরোধ জানাই, মশার ওষুধ নিয়ে গবেষণার জন্য। আজ সেই কাজের প্রতিবেদন সবার সামনে উপস্থাপিত হলো।
মেয়র বলেন, একটি স্প্রে মেশিনের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি দাম ফগার মেশিনের। এ মেশিনের পরিবর্তে যে স্প্রে মেশিন ব্যবহার করতাম তা নিয়ে এগিয়ে গেলে অনেক বেশি সুফল পাব। স্প্রে মেশিন সবচেয়ে উপযোগী বলে মনে করি। ফগার মেশিন দিয়ে যে ওষুধ ছিটানো হয় তার কার্যকারিতা নগন্য। লার্ভিসাইড এডাল্টিসাইড মেশিন দিয়ে ওষুধ স্প্রে করলে বেশি সুফল পাব।
মেয়র আরও বলেন, ছোটবেলায় নালায় ছোট ছোট মাছ দেখতাম। এখন বুঝি সেগুলো মশার লার্ভা খেয়ে ফেলত। বদ্ধ জলাভূমিতে ওই মাছ ছেড়ে দিতে পারলে কোটি কোটি টাকার ওষুধ সাশ্রয় হবে। পরিবেশেরও ক্ষতি হবে না। অতিরিক্ত কেমিক্যাল ওষুধ ছিটালে মশা মারতে গিয়ে নিজেরাই মরতে বসব। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মশকনিধনে নিয়োজিত কর্মচারী আছেন তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে যে ওষুধ ব্যবহার করলে মশার উপদ্রব থেকে পরিত্রাণ পাব সেটা ব্যবহার করব।
তিনি বলেন, এখন আমরা আশ্বস্ত হতে পেরেছি কোন ওষুধ ব্যবহার করলে মশা মারতে পারব। আগে বছরের পর বছর মশার ওষুধ ব্যবহার করেছি কিন্তু আন্দাজে ব্যবহার করেছি। হয়তো কখনো বেশি ওষুধ ব্যবহার করেছি, কখনো কম ব্যবহার করেছি। পুরোপুরি সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। আজ একটি যুগান্তকারী দিন। আমরা একটু স্বস্তি পাচ্ছি- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদল আমাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। পথ দেখিয়েছেন মশকনিধন ও ওষুধের কার্যকারিতার বিষয়ে সম্পূর্ণ ধারণা দিয়েছেন। সেই ধারণা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব।