চট্টগ্রামে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আরো ৩০১ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ২৩ দশমিক ০৮ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, এন্টিজেন টেস্টসহ চট্টগ্রামের সাতটি ল্যাবে গতকাল শুক্রবার ১ হাজার ৩০৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করলে নতুন ৩০১ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ে। নতুন শনাক্তদের মাঝে শহরের বাসিন্দা ২৫৮ জন এবং এগারো উপজেলার ৪৩ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ হাটহাজারীতে ১৩ জন, সীতাকু-ে ৬ জন, ফটিকছড়িতে ৫ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৪ জন, রাউজান, পটিয়া, বোয়ালখালী ও লোহাগাড়ায় ৩ জন করে এবং সন্দ্বীপ, সাতাকানিয়া ও বাঁশখালীতে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৭৪ হাজার ৫৬২ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৫৬ হাজার ৪৪০ জন ও গ্রামের ১৮ হাজার ১২২ জন।
গতকাল করোনায় শহরের ৩ ও গ্রামের ৩ রোগী মারা যান। ফলে মৃতের সংখ্যা এখন ৮৭৪ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ৫৩৯ জন ও গ্রামের ৩৩৫ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ২৩৬ জন। জেলায় মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৫৩ হাজার ৮৯৮ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭ হাজার ৪৯৭ জন এবং ঘরে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৪৬ হাজার ৪০১ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২৪১ জন এবং ছাড়পত্র নেন ১৬৬ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ২ হাজার ৩৩৭ জন।
উল্লেখ্য, গতকাল ৬ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে চলতি মাসের প্রথম তেইশ দিনে চট্টগ্রামে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৬৭ জনে। গত এপ্রিল, মে ও জুন মাসের প্রথম ২৩ দিনে যথাক্রমে ৯৭, ৭৪ ও ৪৪ করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। গতকাল শনাক্ত রোগী ও সংক্রমণ হার কিছুটা কমেছে। শনাক্ত রোগী চলতি মাসের দ্বিতীয় সর্বনি¤œ ও সংক্রমণ হার সবচেয়ে কম। এর আগে মাসের সর্বনি¤œ সংক্রমণ হার ছিল ২০ জুলাই, ২৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এ সময় ৭৯০ নতুন রোগী শনাক্ত ও ৪ জনের মৃত্যু হয়। ২ জুলাই মাসের সর্বনি¤œ ২৬২ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ছিল ২৫ শতাংশ। একজনের মৃত্যু হয়।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৭২২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এখানে গ্রামের ৬ জনসহ ৫১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ১৩৭ জনের নমুনার মধ্যে গ্রামের ১০ জনসহ ৬৭ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ১১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ৭ জনসহ ৪৫ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। ১৬ জনের এন্টিজেন টেস্টে গ্রামের ৭ জনের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে ১৬০ নমুনা পরীক্ষা করে গ্রামের ৫ টিসহ ৭৯ টি, মা ও শিশু হাসপাতালে ৪২ টি নমুনায় গ্রামের ৬ টিসহ ২৩টি এবং মেডিকেল সেন্টারে ১১৫ নমুনার মধ্যে গ্রামের ২ টিসহ ২৯ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল, ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ও এপিক হেলথ কেয়ারে করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়নি। এদিন চট্টগ্রামের কোনো নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবেও পাঠানো হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে বিআইটিআইডি’তে ৭ দশমিক ০৬ শতাংশ, চমেকে ৪৮ দশমিক ৯০, চবি’তে ৪০ দশমিক ১৮, এন্টিজেন টেস্টে ৪৩ দশমিক ৭৫, শেভরনে ৪৯ দশমিক ৩৭, মা ও শিশু হাসপাতালে ৫৪ দশমিক ৭৬ এবং মেডিকেল সেন্টারে ২৫ দশমিক ২২ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।