পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আজ বলেছেন, ভারতে করোনা পরিস্থিতির উন্নয়ন হলেই তারা ঢাকায় করোনার টিকা পুনরায় রপ্তানি শুরু করার আশ্বাস দিয়েছে। এদিকে, রাশিয়া ও চীন টিকা সরবরাহ এবং বাংলাদেশের সাথে যৌথভাবে উৎপাদনে প্রস্তুত রয়েছে।
উজবেকিস্তানে যোগাযোগ সম্মেলনের ফাঁকে ভারতীয়, রুশ ও চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে পৃথক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আজ এখানে তিনি এ কথা বলেন।
মোমেন জানান, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শংকর বলেছেন, ‘আমাদের দেশের করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেই আপনারা (বাংলাদেশ) টিকা পাবেন।’
মোমেন আরো বলেন, বাংলাদেশ কখন দিল্লীর কাছ থেকে ক্রয়কৃত অক্সফোর্ড-আস্ট্রাজেনেকার ৩০ মিলিয়ন ডোজ টিকার বাকিটা পাবে, ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সে ব্যাপারে কোন সময়সীমা দেননি।
মোমেন আরো উল্লেখ করেন, জয়শংকর তাকে বলেছেন যে, ভারত কখনোই বলেনি, তারা বাংলাদেশকে আর টিকা দিবে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার সন্তোষ প্রকাশ করেছেন যে, কোভ্যাক্স চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা পাচ্ছে।
ভারত মার্চ মাসে টিকা রপ্তানি স্থগিত করার আগে পর্যন্ত বাংলাদেশ সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই) এর কাছ থেকে ১.২ কোটি টিকা গ্রহণ করেছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সাথে বৈঠকের ব্যাপারে ড. মোমেন বলেন, মস্কো বাংলাদেশকে তাদের করোনা টিকা স্পুটনিক সরবরাহ করা ছাড়াও বাংলাদেশে যৌথভাবে টিকা উৎপাদন করতে সম্মত হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়গুলো এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, যৌথভাবে উৎপাদনের আওতায় রাশিয়া বাংলাদেশকে টিকা উৎপাদনের প্রযুক্তি দিবে না। স্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো শুধু টিকা বোতলজাত করবে।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সাথে বৈঠকের ব্যাপারে ড. মোমেন বলেন, তাদের মধ্যে বাংলাদেশে টিকা সরবরাহ ও এদেশে যৌথভাবে করোনা টিকা উৎপাদনের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে ওয়াং নিশ্চিত করে বলেছেন যে, অনুদান হিসেবে বাংলাদেশ সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের আরো ১০ লাখ ডোজ টিকা পাচ্ছে। চীন বাংলাদেশকে উপহার স্বরূপ যে ১১ লাখ ডোজ টিকা দিয়েছিল এটা তার অতিরিক্ত।
ড. মোমেন বলেন, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে আরো জানিয়েছেন যে, দুটি চীনা ভ্যাকসিন কোম্পানি সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাক বাংলাদেশী ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলোর সাথে যৌথভাবে ভ্যাকসিন উৎপাদনে প্রস্তুত।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশী ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলোর সাথে যৌথভাবে টিকা উৎপাদন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা ও বিষয়টি চূড়ান্ত করতে খুব শিগগিরই চীনা কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা ঢাকায় আসবেন।
তিনি বলেন, বাণিজ্যিকভাবে ক্রয় ছাড়াও দেশবাসীর জন্য পর্যাপ্ত টিকা নিশ্চিত করার জন্য ঢাকা কোভ্যাক্সের আওতায় ইতোমধ্যেই বিভিন্ন সূত্র থেকে আরো ভ্যাকসিন আনার একটি ভাল পথ তৈরি করে ফেলেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ১৫ ও ১৬ জুলাই তাসখন্দে অনুষ্ঠিত ‘সেন্ট্রাল অ্যান্ড সাউথ এশিয়া: রিজিওনাল কানেক্টিভিটি, চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড অপারচুনিটি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান শেষে আজ সকালে দেশ ফিরেছেন।